ওষুধে নয়, হাতের নাগালের ৫ খাবারেই বিদায় নেবে ফ্যাটি লিভার

প্রতীকী ছবি
আমাদের জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসের ভুলে লিভারের ফ্যাট আরও বেড়ে যায়। এই পরিস্থিতি নিয়ে অনেকেই থাকে চিন্তিত। এই সমস্যা মোকাবিলা করতে ৫ খাবার ডায়েটে রাখতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
ফ্যাটি লিভার অসুখটি এখন ঘরে ঘরে। আমাদের মতো ভাত-রুটি খাওয়া দেশে এই রোগ যে ছেঁয়ে যাবে, এটা বিশেষজ্ঞরা সহজেই অনুমান করতে পারেন। আসলে কার্বোহাইড্রেটের সঙ্গে এই রোগের বিশেষ যোগাযোগ রয়েছে। আর আমাদের ডায়েট কার্বোহাইড্রেট প্রধান হওয়ায় ভারতে এই অসুখ বেশি দেখা যায়।
তবে এখনও জনগণের মধ্যে এই রোগ নিয়ে তেমন একটা সচেতনতা নেই। আদতে রোগের প্রারম্ভিক পর্যায়ে তেমন একটা সমস্যা পরিলক্ষিত হয় না বলে অধিকাংশই এই রোগ নিয়ে সচেতন থাকেন না। যদিও এই অসুখ থেকে লিভার সিরোসিস, লিভার ফেলিওর হতে পারে। তাই সাবধান হওয়া জরুরি।
এই প্রসঙ্গে মেডলাইনপ্লাস. গভ. জানাচ্ছে, লিভার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। এই অঙ্গটি খাবার হজমে, এনার্জি ধরে রাখতে, শরীর থেকে বিষ বের করে দিতে সাহায্য করে। এহেন যকৃতে ফ্যাটের আস্তরণ পড়লে বলা হয় ফ্যাটি লিভার ডিজিজ।
মুশকিল হলো, এই অসুখের তেমন একটা চিকিৎসা নেই। বরং ওষুধের পাশাপাশি ডায়েটে বদল আনতে হয়। আসুন জানা যাক কোন কোন খাবার ফ্যাটি লিভারে উপকারী-
১. রসুন
রসুন গুণে বহু অসুখ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই তো প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে ররসুনকে এতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ওয়েব মেড জানাচ্ছে, রসুন ফ্যাটি লিভার রোগীদের জন্যও ভীষণই উপকারী। ২০১৬ সালের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ফ্যাটি লিভার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে রসুন। এমনকী এই মশলা ওজন কমাতে পারে বলে নন অ্যালকোহোলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজে ভীষণ উপকার মেলে।
২. ওমেগা থ্রি যুক্ত খাবার
সব ফ্যাট খারাপ নয়। কিছু ফ্যাট শরীরের জন্য ভালো। এই যেমন ওমেগা থ্রি ফ্যাটের কথাই ধরুন। এই ফ্যাটি অ্যাসিড গোটা শরীরের উপকার করে। দেখা গিয়েছে, খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল-কে কমাতে পারে ওমেগা থ্রি। পাশাপাশি কমায় ট্রাইগ্লিসারাইডস। তাই ওমেগা থ্রি যুক্ত খাবার খাওয়া চাই। এক্ষেত্রে খেতে পারেন স্যালমন, সার্ডিনের মতো বিদেশি মাছ। এ ছাড়া ফ্ল্যাক্সসিড, আমন্ড ও ওয়ালনাটে এই উপাদান মেলে।
৩. দিনে ২ কাপ কফি
কফি মুখে নিলেই শরীর হয়ে উঠে চাঙ্গা। হঠাৎ করেই কাজে বসে মন। কিন্তু আজ আপনাকে আরও একটি সুখবর দেব কফির বিষয়ে। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কফি পান করার মাধ্যমে লিভারের ক্ষত সারে। এমনকী কফি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এ ছাড়া দেহের বিপাক ক্রিয়া ঠিকমতো চলতে থাকে এই পানীয়ের মাধ্যমে। ফলে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত মানুষের দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা বাড়ে।।
৪. ব্রকোলি
আপনারা বাঁধাকপি, ফুলকপি তো খান, তবে ব্রকোলিতে এত আপত্তি কেন! এই সবজি খেতে মোটের উপর ভালোই। পাশাপাশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্ল্যাভানয়েডসে ভরপুর। এ ছাড়াও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। তাই নিয়মিত ব্রকোলি খান। ব্রকোলি খেলে ফ্যাটি লিভার আক্রান্তদের লাভ মেলে। এই খাবারে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা লিভারে থাকা ফ্যাট ঝরায় এবং নতুন করে মেদ জমতে বাধা দেয়। আর এই তত্ত্ব গবেষণাতেও এরইমধ্যে প্রমাণিত।
৫. গ্রিন টি নিয়মিত পান করুন
গ্রিন টি দারুণ এক পানীয়। এই পানীয় বহু শারীরিক সমস্যার সমাধান করে দিতে পারে। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা বিপাকের হার ঠিক রাখে। এমনকী এই উপাদানই দেহ থেকে খারাপ পদার্থ বের করে দিতে পারে। এই পানীয়ে থাকা ক্যাটাচিনস নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ফ্যাটি লিভারে উপকারী। তাই নিয়মিত এই পানীয় মুখে তুলুন।
সূত্র: এই সময়
বিভি/টিটি
মন্তব্য করুন: