১৮ জুলাই ২০২৪
আন্দোলন দমনে ইন্টারনেট শাটডাউন করে করা হয় ডিজিটাল ক্র্যাকডাউন
২০২৪ সালে জুলাই মাসে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন রূপ নেয় সরকার পতনের দাবিতে। আন্দোলন দমনে আওয়ামী সরকার সহিংসতার পথ বেছে নেয়, ইন্টারনেট শাটডাউন করে ডিজিটাল ক্র্যাকডাউন করা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয় অর্থনীতি ও গণমাধ্যম।
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে ছাত্র জনতার শুরু হওয়া আন্দোলন ধীরে ধীরে রূপ নেয় সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে, যোগ দেন সরকারি-বেসরকারি স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সহ সর্বস্তরের মানুষ।
আন্দোলনের এক পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং রংপুরে আবু সাইদকে গুলি করে হত্যার পর আন্দোলন আরো বেগবান হয়। অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মতো আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে দেশের পাড়া মহল্লায়। আন্দোলন দমাতে সহিংস হয় সরকার। পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায় আন্দোলনরত ছাত্র জনতার ওপর। ডিজিটাল ক্র্যাকডাউন করতে ডেটা সেন্টার পুড়ে যাওয়ার নাটক মঞ্চস্থ করা হয়।
আন্দোলন দমাতে ১৬ জুলাই থেকে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়, পরে ব্রডব্যান্ড এবং ১৮ জুলাই সন্ধ্যা থেকে মোবাইল/ব্রডব্যান্ড সকল প্রকার ইন্টারনেট বন্ধ করে কমপ্লিট শাটডাউন করে দেওয়া হয়, সেদিন সাময়িক বন্ধের কবলে পড়ে বাংলাভিশন সহ চারটি টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার।
পরে ২৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কয়েকধাপে ইন্টারনেট বন্ধ হওয়া এবং ফেরার মতো ঘটনা ঘটে। ইন্টারনেট সোসাইটির তথ্য বলছে, সে সময় বাংলাদেশে প্রতিদিন ক্ষতির পরিমাণ ছিলো ৩৫ লাখ ডলার।
বিদ্যমান আইনে এখনো সরকার চাইলে ইন্টারনেট শাটডাউন করতে পারে। তবে আইনটি সংশোধনে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে বলে জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল এমদাদ উল বারী।
সরকারের হস্তক্ষেপ থেকে ইন্টারনেটকে বের করে আনতে পট পরিবর্তনের পর সাইবার সিকিউরিটি অধ্যাদেশ-২০২৫ এ ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। আইন/নীতিমালা কিংবা অধ্যাদেশের পাশাপাশি ইন্টারনেট বন্ধ রোধে রাজনৈতিক সদিচ্ছার উপর জোড় দেন বিশ্লেষকরা।
ইন্টারনেট শাটডাউনসহ আড়িপাতা বন্ধে সরকার কাজ করছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
রাষ্ট্রীয় অর্থ গচ্চা দিয়ে ইন্টারনেট বন্ধ রাখলেও শেষ পর্যন্ত গদি বাঁচাতে পারেননি শেখ হাসিনা। ৫ আগস্ট গণভবন অভিমুখে ছাত্র-জনতার পদযাত্রার সময় ক্ষমতা ছেড়ে আশ্রয় নেন ভারতে।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: