• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

প্রত্যন্ত এলাকায়ও হবে বিউটি পার্লার, নারীর ক্ষমতায়নে নতুন মাত্রা

প্রকাশিত: ১৬:৩৪, ১২ জানুয়ারি ২০২১

আপডেট: ১৬:৩৫, ১২ জানুয়ারি ২০২১

ফন্ট সাইজ
প্রত্যন্ত এলাকায়ও হবে বিউটি পার্লার, নারীর ক্ষমতায়নে নতুন মাত্রা

কিছু বছর আগেও বাসার বাইরে গিয়ে সাজার বা রূপচর্চার রেওয়াজ তেমন ছিল না। বিয়ের কনেকে বাসায় সাজাতে দেখা যেত। ৮০'র দশকে এসে কেবল বিত্তবান রূপসচেতন নারীই পার্লারে যেতেন। কিন্তু বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে দৃশ্যপট অনেকটাই পাল্টে গেছে। এখন মধ্যবিত্ত পরিবারের নারীও যাচ্ছেন বিউটি পার্লারে। আর বিয়ের কনেকে সাজাতে নামি-দামি পার্লারে গিয়ে অর্ধলক্ষ টাকা পর্যন্তও ব্যয় করছেন কেউ কেউ।

১৯৮০র দশকের শেষদিকে বাংলাদেশে হাতে গোণা কয়েকটি বিউটি পার্লার ছিল। ৯০র দশকে পার্লারের প্রসার ঘটতে শুরু করে। আগে রাজধানী ঢাকা এবং বড় বড় জেলা শহরগুলোতেই মূলত: বিউটি পার্লারের চল ছিল; কিন্তু এখন অবস্থা ভিন্ন। ঢাকা ও জেলা শহর ছাড়িয়ে বিউটি পার্লার এখন উপজেলা সদর, এমনকি গ্রামের প্রত্যন্ত বাজারেও ছড়িয়ে পড়েছে। তবে বিউটি পার্লারের সংখ্যা বাড়লেও দক্ষ কর্মীর সংখ্যা সে অনুপাতে বাড়েনি। ফলে অনেক ক্ষেত্রে পার্লারে গিয়ে নারীকে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে, অদক্ষ কর্মীর পাল্লায় পড়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধির বদলে সৌন্দর্যহানি ঘটছে।

বর্তমানে দেশে জনপ্রিয় এই  বিউটি পারলার বা সৌন্দর্যচর্চা সেবাকেন্দ্রের প্রতি আগ্রহের কারণে সরকারও এই খাতকে বিকশিত করতে চায়। তাই নতুন নারী উদ্যোক্তা তৈরির জন্য দেশের ৮০টি উপজেলায় বিউটি পারলার স্থাপন করে দেবে সরকার। এরই মধ্যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে ৪৪১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, যা এখন চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায়। এটি বাস্তবায়ন করবে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটির আওতায় বিউটি পার্লারের পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য ৮০টি ফুড কর্নারও করে দেয়া হবে। নির্বাচিত ৮০টি উপজেলায় নারীদের জন্য স্থাপন করা হবে বিক্রয় ও প্রদর্শনীকেন্দ্র। যেসব নারী জাতীয় মহিলা সংস্থার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে প্রশিক্ষণ নেবেন, তাঁদেরকেই বিউটি পারলার, ফুড কর্নার ও বিক্রয়কেন্দ্র করে দেয়া হবে। ৫ থেকে ১০ জন মিলে একেকটি বিউটি পারলার পরিচালনা করবেন। একই পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে ফুড কর্নার ও বিক্রয়কেন্দ্র। তাঁদের এককালীন টাকা দেবে সরকার। সেইসাথে বিউটি পারলার সাজাতে যেসব উপকরণ প্রয়োজন হয়, সেসবও সরবরাহ করা হবে। তবে বিউটি পারলার, ফুড কর্নার এবং বিক্রয় ও প্রদর্শনীকেন্দ্র ভাড়া নিতে হবে নারী উদ্যোক্তাদের।

এরই মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে স্থাপিত ১৪টি বিউটি পার্লার থেকে সফলতা পাওয়ার পর, নতুন করে আরও ৮০টি গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এজন্য ‘তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করেছে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়। কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ আরও বাড়াতে চায় মন্ত্রণালয়। তাই সব ধরণের সহযোগিতাও অব্যাহত রয়েছে।

জাতীয় মহিলা সংস্থার তথ্য থেকে জানা গেছে, এই প্রকল্পের আওতায় সারা দেশ থেকে ২ লাখ ৫৬ হাজার নারী বাছাই করে তাঁদের ছয় মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রতিদিন একজন নারী প্রশিক্ষণার্থীকে দেড়শ' টাকা করে দেওয়া হবে। তবে শর্ত হচ্ছে- অষ্টম শ্রেণির কম পড়ালেখা এমন কেউ এই প্রশিক্ষণ পাবেন না। এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সব মহলের নারী উদ্যোক্তারা। এক্ষেত্রে তারা বলেন, শুধু বিউটি পারলার ও ফুড কর্নার করে দিলেই হবে না, নারী উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থাও করে দিতে হবে।

উন্নয়ন বিশ্লেষকরা বলছেন,  এর আগে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নেওয়া প্রকল্পে ইতিবাচক ফল মিলেছে। আগে জেলা পর্যায়ে সরকারের এই কার্যক্রম থাকলেও সেটি এখন উপজেলা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে, যাতে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র নারীরাও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারেন। এতে নারীর উন্নয়ন এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে সাথে দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরবে দুর্বার গতিতে।

 

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2