• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

‘মানুষের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে বাসযোগ্য শহর নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে’

প্রকাশিত: ১৭:৩৩, ১৭ মে ২০২৫

আপডেট: ১৭:৩৩, ১৭ মে ২০২৫

ফন্ট সাইজ
‘মানুষের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে বাসযোগ্য শহর নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে’

ঢাকা এবং পাশ্ববর্তী শিল্পঘন এলাকা তথা গোটা বাংলাদেশের মানুষের সুস্থ জীবন যাপনের স্বার্থে পরিবেশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নীতি প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন রাজনৈতিক নেতা এবং বিশিষ্টজনরা। 

শনিবার (১৭ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলিনায়তনে ‘পরিবেশবান্ধব নগর গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবনা’ শীর্ষক সংলাপে এসব দাবি জানানো হয়। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান নগরায়ণ, দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় পরিবেশবান্ধব ও টেকসই নগর গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা ও তাদের পরিকল্পনা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার লক্ষ্যে এই সংলাপের আয়োজন করা হয়।

বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (সেন্টার ফর অ্যাটমোসফেরিক পল্যুশন স্টাডিস-ক্যাপস), পরিবেশবাদী সংগঠন 'মিশন গ্রিন বাংলাদেশ', সামাজিক আন্দোলন 'নাগরিক বিকাশ ও কল্যাণ-নাবিক' এবং সেন্টার ফর গভর্নেন্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট-সিজিডি যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে। ক্যাপস চেয়ারম্যান অধ্যাপক কামরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নাবিকের সহ-সভাপতি বুরহান উদ্দিন ফয়সল।

সংলাপের মূল উদ্দেশ্য ছিল- বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পরিবেশ বিষয়ক চিন্তা ও পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত হওয়া, পরিবেশবান্ধব নগর গঠনে নীতিগত উদ্যোগ ও বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি, গণপরিবহন, কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সবুজ অবকাঠামো নির্মাণে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতির ওপর গুরুত্বারোপ করা। এছাড়া, যুবসমাজ ও নাগরিক সমাজকে রাজনৈতিক নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়ায় আরও সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত করা এবং সকল পক্ষের মধ্যে একটি টেকসই পরিবেশ ভাবনার সংলাপ তৈরি করাও ছিল এই আয়োজনের অন্যতম লক্ষ্য।

সংলাপে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সহ-সম্পাদক নিলোফার চৌধুরী মনি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জসিম উদ্দিন, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, এনসিপির যুগ্ম আহবায়ক জাবেদ রাসিন, এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানি আব্দুল হক, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রহমান, হিউম্যান এইড রিসার্চ ল্যাব এন্ড হসপিটালের চেয়ারম্যান ডা. শেখ মঈনুল খোকন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাশেদুজ্জামান, নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সেক্রেটারি ফয়সাল খান। মিশন গ্রিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান রনি ও পরিবেশ সাংবাদিক কেফায়েত শাকিল প্রমুখ। আয়োজকের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন নাবিকের সভাপতি ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ হাসান প্রমূখ।

আলোচনার সূত্রপাত করে অনুষ্ঠানের সভাপতি, ক্যাপসের চেয়ারম্যান এবং স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, "দূষণের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ প্রায়শই প্রথম বা দ্বিতীয় অবস্থানে থাকছে। একটি পরিবেশবান্ধব নগর গড়ে তুলতে রাজনৈতিক দলগুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে এবং তাদের সদিচ্ছাই পারে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে।"

বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নিলোফার চৌধুরী মনি বলেন, "পরিবেশ রক্ষায় সরকারের কার্যকর ভূমিকা প্রয়োজন। বিল, ডোবা, পুকুরসহ সকল জলাশয় দূষণমুক্ত রাখতে হবে এবং খেলার মাঠগুলো উদ্ধার করতে হবে। দেশের ২০ কোটি মানুষ যদি দুটি করেও গাছ লাগায়, তাহলে ৪০ কোটি নতুন গাছ লাগানো সম্ভব। নেতাদের নিজেদের গাছ লাগাতে হবে এবং জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।" তিনি এ ধরনের সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি কার্বন নিঃসরণ হ্রাস, প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম অনুসরণ, পরিবেশবান্ধব কৃষিব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং উন্নত গণপরিবহন ব্যবস্থা চালুর ওপর জোর দেন, যাতে সমাজের সকল স্তরের মানুষ তা ব্যবহারে আগ্রহী হয়। তিনি বলেন, "বাংলাদেশের প্রতিটি শহর পরিকল্পনামাফিক গড়ে তুলতে হবে, অপরিকল্পিত নগরায়ন বন্ধ করতে হবে।"

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, "নীতিমালা প্রণয়ন ও তার সঠিক বাস্তবায়ন জরুরি। বিল্ডিং কোড কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে, ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং বাড়ি নির্মাণে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা মেনে চলতে হবে।"

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক একটি বসবাসযোগ্য ও সুপরিকল্পিত নগরীর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, "শহরকে যেমন তেমন করে গড়ে তোলা যাবে না। গ্রিন করিডোর তৈরি, পরিবেশবান্ধব যানবাহন ও সাইকেলের জন্য আলাদা লেন, ইলেকট্রিক বাস সার্ভিস চালু এবং উঁচু ভবন থেকে ময়লা ফেলা বন্ধ করার মতো পদক্ষেপ নিতে হবে।"

আলোচনা সভায় আরও যেসব বিষয় গুরুত্ব পায় তার মধ্যে রয়েছে: নগর পরিকল্পনায় জলবায়ু সহনশীলতা, কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে পরিবেশবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা, নগরে সবুজায়ন ও বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ, পানির নিরাপত্তা ও আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে পরিবেশ ইস্যুর যথাযথ অন্তর্ভুক্তি।

আয়োজক এবং অংশগ্রহণকারী বক্তারা একটি সবুজ, পরিচ্ছন্ন ও টেকসই নগর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তারা আশা প্রকাশ করেন, এই ধরনের আলোচনা নীতি নির্ধারকদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি করবে এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে উৎসাহিত করবে।

বিভি/কেএস/এজেড

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2