• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

সীতাকুণ্ডের ছড়িয়ে পড়া রাসায়নিকে স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের শঙ্কা

প্রকাশিত: ২২:২১, ৯ জুন ২০২২

আপডেট: ১৪:১৭, ১১ জুন ২০২২

ফন্ট সাইজ
সীতাকুণ্ডের ছড়িয়ে পড়া রাসায়নিকে স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের শঙ্কা

ভয়াবহ বিস্ফোরণে ঝরেছে ৪৬টি তাজা প্রাণ, ভেঙেছে এলাকার মানুষের ঘরবাড়ি, হয়েছে কয়েক কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি। এতেই কী শেষ সীতাকুণ্ডের ধংসযজ্ঞ? না। রসায়নবিদরা বলছেন ঘটনার শুরু হয়েছে মাত্র। বিএম ডিপোর বিস্ফোরণে ছড়িয়ে পড়া রাসায়নিক ঘটাতে পারে আরও বহু ঘটনা। যার মধ্যে আশেপাশের এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যগত ক্ষতি হতে পারে অন্যতম একটি।

সীতাকুণ্ডের ঘটনায় প্রথমে রাসায়নিক থাকার কথা স্বীকারই করেনি ডিপো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কেমিক্যালের কারণে বিস্ফোরণ ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছে ঘটেছে এতগুলো মৃত্যু। তিন দিনেও নেভেনি আগুন। এতে স্পষ্ট হয়েছে সেখানে কেমিকেলে ছিল। পরে অবশ্য চাপের মুখে ডিপো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে সেখানে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের মজুদ ছিল।

সীতাকুণ্ডে দুর্ঘটনার পর থেকে সেখানকার বায়ুতে রাসায়নিকের উপস্থিতি নিয়ে গবেষণা করছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের বিজ্ঞানীরা। সরকারি এই সংস্থাটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আফতাব আলী শেখ বাংলাভিশনকে বলেছেন, নিঃসন্দেহে সেই ডিপোতে একাধিক রাসায়নিকের মজুদ ছিল। এ কারণেই ভয়াবহ হয়েছে এই দুর্ঘটনা এবং ছিল দীর্ঘ সময়।

ড. আফতাব আলী শেখ বলেন, সীতাকুণ্ডে শুধু হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ছিল না, আরও একাধিক অর্গানিক কেমিক্যাল ছিল। এসব কেমিক্যাল বিস্ফোরণের মাধ্যমে পরিবেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বাতাসে ছড়িয়ে পড়া কেমিকেল ফেনী, নোয়াখালী হয়ে ঢাকার দিকে আসছে। আমাদের গবেষকরা সেটি পর্যবেক্ষণ করছেন। এসব কেমিক্যালের কারণে শ্বাসকষ্ট হতে হতে একজন মানুষ মারাও যেতে পারে। তাছাড়া, এটি এসিড বৃষ্টি হয়েও ঝরতে পারে।

বায়ু দূষণে মানুষের স্বাস্থ্যগত ক্ষতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে স্টামফোর্ড বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ণ কেন্দ্র। সংস্থাটির প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ‘বাতাসে ছড়িয়ে পড়া কেমিক্যাল তিনটি মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। সীতাকুণ্ডের এই কেমিক্যাল মূলত ইনহেলেশন অর্থাৎ মুখ বা নাকের মাধ্যমে বা লোমকুপের মাধ্যমে মানুষের দেহে প্রবেশ করতে পারে। এই কেমিক্যাল প্রবেশ করলে স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী নানা ধরনের রোগ হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে শুনতে পারছি স্বল্পমেয়াদীর মধ্যে ছোখে জ্বালাপোড়া বা কম দেখা, চামড়া কুচকে যাওয়া এবং শ্বাসকষ্টে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়া স্থায়ী নানা সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে ক্যান্সার হতে পারে, প্রজনন স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সবচেয়ে ভয়াবহ হলো মানুষের জেনেটিক পরিবর্তনও হয়ে যেতে পারে।’

পরিস্থিতি মোকাবিলায় বছরজুড়ে তাদের শারীরিক খোঁজ রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ও কেমিক্যাল সেফটি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মো. ইয়াসির আরাফাত খান বলেন, ‘বাতাসে যেসব কেমিক্যাল ছিল তা কোন মানুষ কতটুকু গ্রহণ করেছে তার ওপর নির্ভর করবে কার কেমন ক্ষতি হবে। কারো কারো হয়তো এখন কিছুই দেখা যাবে না। বছরখানেক পরও সমস্যার দেখা দিতে পারে। আমরা পরামর্শ দিবো, যখনি যে সমস্যা চোখে পড়ুক সঙ্গে সঙ্গে যেন তারা হাসপাতালে যায়। কোনোভাবেই যেন অবহেলা না করে। ’

ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়দের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া উচিত ছিল বলেও জানান এই রসায়নবিদ।

 

বিভি/এনএ

মন্তব্য করুন: