সবাই শ্রমিকের পক্ষে বলে, কিন্তু তাদের অধিকার দেয় না: সাইফুল হক

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থান শ্রমিকদের অমানবিক জীবনের কোনো পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি। গণঅভ্যুত্থান শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ সবচেয়ে বেশি জীবন দিলেও অন্তর্বর্তী সরকারে তাদের কোনো জায়গা হয়নি, সরকারে তাদের কোনো প্রতিনিধিও নেই; সরকারে মালিক শ্রেণির পক্ষের লোকেরাই জায়গা করে নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ মে) বিকালে সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে বিপ্লবী শ্রমিক সংহতি আয়োজিত মে দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, জীবন দেয় শ্রমজীবী মেহনতিরা, মাখন খায় ধনী, বিত্তবান আর শোষক শ্রেণির প্রতিনিধিরা।
তিনি ক্ষোভের সাথে উল্লেখ করেন, পুরানো জমানার মতো অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও শ্রমিকদের ওপর নিপীড়ন, নিপীড়ন ও বঞ্চনা অব্যাহত রয়েছে। এই আমলেও শ্রমিকদের ওপর গুলি চলেছে।
তিনি বলেন, গণআন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান হলো বৈষম্যের বিরুদ্ধে; অথচ শ্রমজীবী মেহনতিরাই সবচেয়ে নিষ্ঠুর বৈষম্যের শিকার। সরকার এতগুলো সংস্কার কমিশন করলেও বৈষম্য বিলোপে কোনো কমিশন গঠন করেনি।
তিনি বলেন, সরকার, সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক দল সাম্য প্রতিষ্ঠার কথা বলেন, কিন্তু শ্রমদাসত্ব, শোষণ ও নির্মম বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলেন না। তারা শ্রমিকদের ব্যবহার করেন, কিন্তু তাদের অধিকার দিতে চান না।
তিনি শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশকে স্বাগত জানিয়ে এই মে মাসের মধ্যে শ্রমিকের মজুরি ও অধিকার সংক্রান্ত শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করার জনা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানান। অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রম খাতকে স্বীকৃতি দিয়ে এই খাতের শ্রমিকদের উপযুক্ত মজুরি, সংগঠন করার স্বাধীনতাসহ তাদের গণতান্ত্রিক ও মানবিক অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহবান জানান।
তিনি বলেন, ভোটের অধিকার না থাকলে শ্রমিক আরও অধিকারহীন ও মর্যাদাহীন হয়ে পড়ে। মুক্তি অর্জনে শ্রমিকদের ঐক্য ও সংগঠন জোরদার করার আহবান জানান তিনি।
বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন-বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, শ্রমজীবী নারী মৈত্রীর নেত্রী রাশিদা বেগম, শ্রমিক সংহতির নেতা নূরুল ইসলাম, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, বিপ্লবী যুব সংহতির সদস্যসচিব মীর রেজাউল আলম প্রমুখ।
আলোচনা সভার শুরুতে গণঅভ্যুত্থানে নিহত সংগঠনের সদস্য শহীদ বদিউজ্জামান ও আব্দুল লতিফসহ সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
বিভি/টিটি
মন্তব্য করুন: