কেউ যেন চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হন সেদিকে নজর দেওয়া হবে: তারেক রহমান

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আনা হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, অতিরিক্ত রোগীদের জন্য সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। কেউ যেন চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হন—সে দিকে নজর দেওয়া হবে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বাগবাড়িতে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী চিকিৎসা ক্যাম্প শেষে আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ‘অনেক দিন পর নিজ বাড়িতে এসে পরিচিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে ভালো লাগছে। আমরা যদি এ দেশের মানুষের ভালোবাসায় ক্ষমতায় যেতে পারি, তাহলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন হবে। যাতে হাসপাতালে কোনো রোগীকে আর মাটিতে শুয়ে থাকতে না হয়। ভবিষ্যতে অতিরিক্ত রোগীদের জন্য সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। কেউ যেন চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হন—সে দিকে নজর দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘গ্রাম থেকে গ্রামে প্রতিটি ঘরে ঘরে হেলথ কেয়ার তৈরি করে মানুষকে উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সরকারে থাকাকালীন গ্রামে পল্লী চিকিৎসকদের মাধ্যমে যেমন সেবা প্রদান করা হয়েছিল, তেমনি ব্যবস্থা করা হবে। ইনশাআল্লাহ, বিএনপি ক্ষমতায় এলে কোনো রোগীকে আর হাসপাতালের বারান্দায় বসে চিকিৎসা নিতে হবে না। বেডে থেকেই সবার সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গ্রামের সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে প্রতিটি পরিবারের ‘মা’কে একটি চিকিৎসা কার্ড প্রদান করা হবে। ওই কার্ডের মাধ্যমে পরিবারের শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। আমরা রাজনীতি করি মানুষের জন্য—নারীদের সাবলম্বী করা, শিক্ষা, বয়স্ক ভাতা, চিকিৎসা, কৃষক ও কৃষি খাতের উন্নয়নে পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য। আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন দায়িত্ব পালন করার জন্য। ২৭ বছর আগে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু হয়েছিল। আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে যেন মানুষ কম অসুস্থ হয়। সে জন্য মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে—কি করলে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ থেকে দূরে থাকা যায় তা জানাতে হবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ভাষা শেখানো হবে। ভালো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে তারা ভালো চাকরি পায়। চাকরি না পেলেও যেন নিজেরাই কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে এবং দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে। আজকের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার আদর্শে গড়ে উঠুক নতুন প্রজন্মের সৈনিকরা, যারা সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াবে—বিপদে-আপদে সহযোগিতা করবে। আমরা যেন জনগণের প্রকৃত সেবক হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারি—এটি হোক আমাদের আগামী দিনের শপথ।’
এদিন বগুড়ার বাগবাড়ির শহীদ জিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি ও তারেক রহমানের সহধর্মিণী, বিশিষ্ট কার্ডিওলজিস্ট ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জোবাইদা রহমানের পরামর্শে পরিচালিত স্পেশাল ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে ঢাকা ও বগুড়ার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা প্রায় সাত থেকে আট হাজার রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। একই সঙ্গে রোগীদের ওষুধ ও পরামর্শপত্র দেওয়া হয়।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে স্বাস্থ্য ক্যাম্পের আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি ডা. জোবাইদা রহমান।
ডা. জোবাইদা রহমান বলেন, ‘মানবসভ্যতার এক ক্রান্তিলগ্নে আমরা আজ উপস্থিত হয়েছি। আর্তমানবতার সেবায় আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে পারি। এই ফাউন্ডেশনের প্রতিটি সদস্যের আত্মত্যাগ ও মানুষের জন্য পথচলা ইতিহাস হয়ে থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘স্বল্প সামর্থ্যেও বহু মানুষকে আকাশচুম্বী সাফল্য দিয়েছে এই ফাউন্ডেশন। ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও মানবসেবায় এটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো প্রতীয়মান হবে।’
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: