আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম রমজান
রমজান হলো আত্মার শুদ্ধিকরণের মাস, তাকওয়া অর্জনের মাস
হিজরি বর্ষের নবম মাসটির নাম রমজানুল মুবারক। এ মাসের মর্যাদা ও মাহাত্ম্য বলার অপেক্ষা রাখে না। এটি এমন একটি মাস যে মাসে মানুষ ক্ষুধা, তৃষ্ণায় কাতর হয়ে লোকচক্ষুর আড়ালে গিয়ে যাবতীয় পানাহার করতে পারে। কিন্তু রোজাদার একমাত্র মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির জন্য নিজের ক্ষুধা, তৃষ্ণা, কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ প্রভৃতি রিপু দমনপূর্বক রোজা পালন করেন। এ মাস মহান আল্লাহ তাআলার অধিক থেকে অধিকতর নৈকট্য লাভের উত্তম সময়। রহমত, মাগফেরাত আর নাজাতের বার্তা নিয়ে আসা রমজান নিঃসন্দেহে অন্যান্য মাস অপেক্ষা অধিক মর্যাদাপূর্ণ। এ মাসের অর্জিত জ্ঞান অন্য সকল মাসে প্রয়োগের মাধ্যমে আমাদের জীবন সুন্দর ও আলোকিত হয়ে ওঠে।
রমজান মাস অত্যন্ত মহিমান্বিত মাস কারন এ মাসেই পবিত্র কোরআন মাজীদ নাজিল হয়েছে। এ মাসেই আমরা লাইলাতুল কদর পাই; যা সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত বা পবিত্র রজনী। এ রাতে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সম্মান বৃদ্ধি করে দিবেন এবং মানবজাতির ভাগ্য পুনর্নির্ধারণ করা হয়। তাই এ রাত অত্যন্ত পুণ্যময় ও মহাসম্মানিত হিসেবে পরিগণিত। তাছাড়া রোজার শিক্ষা নিয়ে তাকওয়ার গুণাবলি অর্জনের মধ্য দিয়ে মানুষ ইহকালীন কল্যাণ ও পারলৌকিক মুক্তি লাভ করতে পারে। মাহে রমজানের এ শিক্ষা যদি বাকি ১১ মাস কাজে লাগানো যায়, তাহলে পৃথিবীতে এত অশান্তি ও অনাচার থাকতে পারে না। যেমন পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যে সংশোধিত হলো, সেই সফলকাম হলো।’ (সূরা আল-আ’লা, আয়াত-১৪)
প্রকৃতপক্ষে রমজান হলো আত্মার শুদ্ধিকরণের মাস, তাকওয়া অর্জনের মাস। বেশি বেশি ইবাদত করে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাস। পূর্বের সকল গুনাহের জন্য ক্ষমা চেয়ে প্রকৃত মুসলমান হয়ে জীবনযাপনের প্রতিজ্ঞা করার মাস। তাই রমজানে নফল, তাহাজ্জুদ নামাজ, জিকির, দরূদ ও মিলাদ শরীফ, দোয়া, দান-সদকাসহ অতিরিক্ত ইবাদত-বন্দেগিতে শরিক হয়ে মহান আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভ মুসলিম সম্প্রদায়ের শ্রেষ্ঠ উপায়। এছাড়াও সিয়াম সাধনার দ্বারা মানুষের মধ্যে পারস্পরিক স্নেহ, ভালোবাসা, মায়া-মমতা, আন্তরিকতা, দানশীলতা, বদান্যতা, উদারতা, ক্ষমা, পরোপকারিতা, সহানুভূতি, সমবেদনা প্রভৃতি সদাচরণ ব্যক্তি জীবনে প্রতিফলনের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক জগতে উচ্চমাকামে আরোহণ করা যায়।
লেখক : ফেনী সদর, ফেনী
মন্তব্য করুন: