বাংলাভিশনের ভিডিও দেখে সন্ধান
১৪ মাস পর মায়ের কোলে ‘মৃত’ নিয়ামুল, গ্রামজুড়ে উচ্ছ্বাস

মায়ের কোলে নিয়ামুল
বাংলাভিশনে ‘জনমত’ প্রচারের পর নিখোঁজের ১৪ মাস পর প্রতিবন্ধী সন্তানকে ফিরে পেয়েছে তার পরিবার। সোমবার (৯ জানুয়ারি) সকালে নিখোঁজ নিয়ামুলের পিতা ঢাকা কমলাপুর থেকে তাকে নিজ জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসেন। দীর্ঘদিন পর বুকের ধন ছেলেকে পেয়ে বেজায় খুশি তার পরিবার।
তবে দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ থাকায় অযত্নে তার শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় তার সুচিকিৎসা নিশ্চিতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে দরিদ্র পরিবারটি।
জানা গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়নের মৈশার গ্রামের আলী আহমেদের ছেলে নিয়ামুল। জন্মের পর থেকেই সে বাক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী। ৪ ভাই-বোনের সংসারে একমাত্র ভাই সে। তবে প্রতিবন্ধী হলেও সে ছিল ঘরের সকলের আদরের। তবে গেলা ১৪ মাস আগে ভোরে পরিবারের অজান্তেই ঘর থেকে বের হয়ে যায় সে। এর পর থেকে তার আর কোন খোঁজ ছিল না। তার সন্ধান চেয়ে দীর্ঘদিন ধরে তার পরিবারের লোকজন ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে তার খোঁজ করে আসছিল। খোঁজ চালিয়ে যাওয়ার একপর্যায়ে ছেলেকে ফিরে পাওয়া আশা যখন ম্লান হয়ে আসছিল, তখনই গত ৬ জানুয়ারি বাংলাভিশনের প্রোগ্রাম জনমত প্রচারের মাধ্যমে ছেলের খোঁজ পান পিতা আলী আহমেদ।
তবে তার ছেলেকে ঢাকার কোথায় দেখা গেছে সে বিষয়ে ধারণা ছিল না তার। তবু দেরি না করে দ্রুত ছেলেকে নিয়ে আসতে ঢাকায় ছুঁটে যান। সেখানে গিয়ে যোগাযোগ করেন প্রতিবেদকের সঙ্গে। যৌথভাবে টানা ৩ দিন ধরে ঢাকার অলিগলিতে ছেলের সন্ধান করে বেড়ান তিনি।
অবশেষে সোমবার সকালে কমলাপুর রেলস্টেশনে প্রিয় ছেলের সন্ধান পান পিতা। এ সময় পিতা ও পুত্রের দেখা হলে ছেলে নিয়ামুল তার পিতাকে বাবা বলে জড়িয়ে ধরে। এ সময় স্টেশনের উপস্থিত কুলিগণ আলী আহমদের কাছে থাকা নিয়ামুলের ছবি ও জিডির কাগজ দেখে নিশ্চিত হয়। পরে নিয়ামুলকে তার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়।
বিকেলে পিতা ও পুত্র একত্রে বাড়ি ফিরে এলে এলাকাজুড়ে উৎসুক জনতার ঢল নামে। সবাই নিয়ামুলকে দেখতে তার বাড়িতে ছুটে আসে। এদিকে নারী ছেড়াধন একমাত্র ছেলেকে পেয়ে বেজায় খুশি তার মা।
স্থানীয় ও পরিবার সদস্যরা জানান, দীর্ঘদিন অযত্ন ও অবহেলার কারণে নিয়ামুলের শরীরে বিভিন্ন সমস্য দেখা দিয়েছে। তার চিকিৎসা করানোর জন্য সহায়তা প্রয়োজন। ছেলেকে হারানোর সেই দিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত পিতা বলেন, ফিরে পাওয়া ছেলেকে বুকে আগলে রাখতে চান তিনি।
প্রতিবন্ধী নিয়ামুলের চিকিৎসায় সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসবে এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: