• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

৪২টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলেও ভাঙার দায়িত্ব নিতে নারাজ রাজউক

ফররুখ বাবু

প্রকাশিত: ১৩:০৭, ১৪ মার্চ ২০২৩

ফন্ট সাইজ
৪২টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলেও ভাঙার দায়িত্ব নিতে নারাজ রাজউক

সরকারি ৪২টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলেও রাজউকের চিঠিতে তা নির্দিষ্ট করা হয়নি। অথচ সংস্থাটি বছরের পর বছর নানা সার্ভের নামে খরচ করে কোটি কোটি টাকা। রাজধানীর গুলিস্থানের সিদ্দিকবাজারে ভবন বিস্ফোরণের ঘটনার পর ভবটিতে কিছু অনিয়মের খোঁজ জানায় রাজউক। 
অথচ কয়েক দশক ধরে ভবনটি ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলো রাজউকের প্রধান কার্যালয়ের আধা কিলোমিটারের মধ্যে। 

 

নিয়ম মেনে ভবন গড়ার ওপর নজরদারির দায়িত্ব রাজউকের। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে রাজউকের উদাসিনতা। ফলাফল মৃত্যুর মিছিল। 
 তিন দশকের পথ চলায় রাজউক শুধু ভবন নির্মাণের অনুমোদন দিয়েই দায় সারছে। 
সংস্থাটির কাছে নেই ৫৯০ বর্গমাইল এলাকায় সরকারি ও ব্যক্তি মালিকাধীন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের পূনাঙ্গ তালিকা।
 
 নিজেদের সক্রিয়তার কথা জানান দিতে তৎপর রাজউক। দফায় দফায় মিটিং আর কমিটি করছেন সংস্থার কর্নধররা। উদ্দেশ্য রাজধানীতে থাকবে না কোনো ঝুঁকিপূর্ন ভবন। 
দু'দিন আগে তোড়জোর করে নগর উন্নয়ন কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় দু'মাসের মধ্যেই ভাঙতে হবে সরকারি ৪২টি ভবন। চিঠি পাঠানো হয় হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে। তবে, সেই চিঠিতে উল্লেখ নেই কোন কোন ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। 

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা জানতে উল্টো রাজউককে চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। এমটিই জানালেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রধান প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দীন পাটোয়ারি। 

রাজধানীতে স্থাপনা রয়েছে ২১ লাখ ৪৭ হাজার ২১৯টি । এর মধ্য ঝুঁকিপূর্ণ কতোগুলো? তা জানতে গত তিন বছরে মাত্র তিন হাজার ২৫২টি ভবনে সার্ভে করেছে রাজউক। এদিকে, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙতে নগর উন্নয়ন কমিটি দু'মাস সময় বেধে দিলেও ভিন্ন কথা রাজউক চেয়ারম্যানের। 
সংস্থাটির চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা জানান, ব্যক্তি মালিকানাধীন ভবন ঝুঁকিপূর্ণ নির্ধারণে এখনো পদ্ধতি আবিষ্কার করতে পারেনি রাজউক। 

এদিকে, সরকারি ৪২টি ভবন ভাঙার কথা রাজউকের চিঠিতে থাকলেও চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা বলছেন ভিন্ন কথা। 
রাজউক ভবন নির্মাণের অনুমোদন দিলেও ভাঙার দায়িত্ব তুলে দিতে চায় সিটি করপোরেশনের কাধে।  

রাজধানীতে থাকবে না কোনো ঝুঁকিপূর্ন ভবন। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিনও জানালের সেই সংকল্পের কথা। 

রাজধানীকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে রাজউক ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের গর্জন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেন নগর পরিকল্পনাবীদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান। 
শহরের ভবন নজরদারিতে রাখা রাজউকের ঘুম না ভাঙলে মৃত্যুর মিছিল দিনে দিনে দীর্ঘ হবার শংঙ্কা এই নগর পরিকল্পনাবীদের।  

 

অতি ঝুঁকিপূর্ণ সরকারি ভবনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩০টি ভবন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের। এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ভবন, মাদ্রাসা বোর্ডের একটি ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি ভবন অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকায় রয়েছে।

যে ১৮৭টি ভবনকে রেট্রোফিটিং করতে হবে তারমধ্যে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ১৫৪টি ভবন রয়েছে। এছাড়া ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির তিনটি, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের চারটি, মাদ্রাসা বোর্ডের ছয়টি, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ১০টি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০টি ভবন আছে।

 

মন্তব্য করুন: