• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

ঘানিম আল মুফতাহ্`র গল্প

প্রকাশিত: ১৮:৩৬, ২১ নভেম্বর ২০২২

আপডেট: ১৭:১০, ২৪ নভেম্বর ২০২২

ফন্ট সাইজ
ঘানিম আল মুফতাহ্`র গল্প

ঘানিম-আল-মুফতাহ ও তার বাবা

ঘানিম-আল-মুফতাহ্ মাত্র ২০ বছর বয়সী কাতারের প্রতিষ্ঠিত এবং বিখ্যাত একজন মানুষ। তার হাত ধরে এবার বেজে উঠেছে ফিফা বিশ্বকাপের দামামা। ২০২২ সালে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবলের আসরের উদ্বোধন করলেন ঘানিম-আল- মুফতাহ্। আল বাইয়াত স্টেডিয়ামের এই অনুষ্ঠান উপভোগ করলো গোটা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমী মানুষ।

ঘানিম-আল-মুফতাহ্’র শরীরের নিচের অংশ নেই জন্মের আগেই দুটো পা হারিয়ে ফেলেন। "কডাল রিগ্রেশন সিনড্রোম" নামে এক রোগে আক্রান্ত ঘানিমের শরীরের নিম্নাংশ বৃদ্ধি পায়নি। শরীরের নিচের অংশ না থাকা সত্বেও তিনি গোটা কাতার তথা আরব দুনিয়ার একজন রোল মডেল। আরবের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে তাঁর ভক্ত, সমর্থকবৃন্দ।


তিনি একজন বিশ্ববিখ্যাত মোটিভেশনাল স্পিকার। তার বক্তব্যের মাধ্যমে উজ্জীবিত, বর্ণময় হয়ে উঠে হাজার বর্ণহীন জীবন।


মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় আলট্রা-সাউন্ড মেশিনে ধরা পড়ে ঘানিমের শরীরের অবিকশিত অংশ। ডাক্তার গর্ভপাতের পরামর্শ দিয়েছিলেন তার মাকে। বলেছিলেন, ‘অপূর্ণাঙ্গ সন্তানের জন্ম দেওয়ার চেয়ে তাকে দুনিয়ার আলো না দেখতে দেওয়া ভালো।’


কিন্তু ঘানিমের মাতা-পিতা সে সিন্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি। কারণ ইসলাম অনুযায়ী গর্ভপাত হলো চূড়ান্ত অপরাধ। ঘানিমের মা "ইমান-উল-আবদেলি" এবং পিতা "মুহাম্মদ-আল-মুফতাহ্" এটাকে মহান আল্লাহর সিন্ধান্ত হিসেবে মেনে নিয়েছিলেন। তারা ঘানিমকে দুনিয়ার আলো দেখালেন। ঘানিমের মা ঘানিমের পিতাকে বলেছিলেন, ‘আমি হবো সন্তানের বাম পা আর তুমি হবে তার ডান পা। আমরা দুজনে সন্তানকে কখনও নিম্নাংশের অভাব টের পেতে দেবো না।’

ঘানিম পৃথিবীর আলো দেখেন ৫মে, ২০০২ সালে। শিশুকাল থেকেই পদে পদে সামাজিক অবহেলার শিকার হন তিনি। স্কুল, খেলার মাঠসহ বিভিন্ন জায়গায় তাকে অপমানিত হতে হতো। কিন্তু তিনি এসবের তোয়াক্কা না করে এগুতে থাকেন নিজের পথে, একেবারে নিজস্ব ছন্দে। বন্ধুদের বোঝাতেন, তার অসম্পূর্ণ শরীরের জন্য তিনি মোটেও দোষী নন। আল্লাহ তাকে যে পরিমাণ অঙ্গ-প্রতঙ্গ প্রদান করে পাঠিয়েছেন-এর জন্য তিনি কৃতজ্ঞ।

নিজের সহপাঠী, বন্ধুবান্ধব-কে এসব বোঝাতে বোঝাতে নিজের অজান্তেই তিনি হয়ে ওঠেন একজন মোটিভেশনাল স্পিকার।

একদিন যার ভুমিষ্ট হওয়া নিয়েই যথেষ্ট সন্দেহ ছিল, তার হাতে উদ্বোধন হতে চলেছে বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত এক প্রতিযোগিতার আসর। 

কাতারের ২০ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী যুবক আজ সেদেশের শান্তির দূত হিসাবে গোটা বিশ্ব দরবারে পৌঁছে গেছেন। এছাড়া তিনি একজন মোটিভেশনাল স্পিকার, কবি, সাহিত্যিক, দারুণ বক্তা হিসাবে আরব দুনিয়া তথা গোটা বিশ্বের মানুষের কাছে সমাদৃত।


আজ তিনি কাতার সরকারের প্রধান প্রতিনিধি হিসাবে বিশ্বের দরবারে নিজের পরিচিতি তুলে ধরলেন।


ধন্যবাদ ঘানিম-আল-মুফতাহ্।। আপনি প্রমাণ করে দিলেন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সাফল্যের পথে কোনো অন্তরায় হয়ে উঠতে পারে না।

বিভি/এনএ

মন্তব্য করুন: