‘লুটেরি দুলহান’ খ্যাত নারীর ২৫ বিয়ে, ধরা পড়লেন আরেক ফাঁদে!

বিয়ে করেছেন ২৫টি। জাল বিয়ে করে পুরুষদের ফাঁসান। এরপর তাদের টাকা-গয়না নিয়ে পালাতেন। এম প্রতারণার অভিযোগে অনুরাধা পাসওয়ান নামে এক নারীকে গ্রেফতার করেছে ভারতের রাজস্থান পুলিশ।
মঙ্গলবার (২০ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতারণার উদ্দেশ্যে এতগুলো বিয়ের কারণে ওই নারী পরিচিতি পেয়েছেন ‘লুটেরি দুলহান’ বা ‘লুটপাটকারী কনে’ নামে। অনুরাধার বিরুদ্ধে অভিযোগ, জাল বিয়েতে পুরুষদের ফাঁসাতেন তিনি। আর এ জন্য একটি নতুন নাম, একটি নতুন শহর এবং একটি নতুন পরিচয় বেছে নিতেন।
এনডিটিভি বলছে, অনুরাধা পাসওয়ান ২৫ জন নিরপরাধ পুরুষকে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকার গয়না ও নগদ টাকা লুট করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জাল বিয়ে করলেও তিনি আদর্শ কনে এবং নিখুঁত পুত্রবধূর খেলা খেলতেন এবং পরে গয়না ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যেতেন। রাজস্থান রাজ্যের সওয়াই মাধোপুর পুলিশ মিসেস পাসওয়ানের বিরুদ্ধে জাল বিয়ের একটি উল্টো কার্ড খেলে তাকে আটক করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিয়েতে রাজি করাতে একেক সময় একেক রকম পরিস্থিতি তুলে ধরতেন অনুরাধা। বেশির ভাগ সময় নিজেকে দরিদ্র হিসেবে উপস্থাপন করতেন। বলতেন, তিনি একা, দরিদ্র ও অসহায়। তিনি বিয়ে করতে চান, কিন্তু আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে জীবনের একটি নতুন অধ্যায় শুরু করতে পারছেন না তিনি।
তার এই প্রতারণার জন্য একটি চক্র কাজ করতো, অনুরাধা ছিলেন সেই চক্রের নেত্রী। তার গ্যাং সদস্যরা তার ছবি এবং প্রোফাইল সম্ভাব্য বরদের কাছে নিয়ে যেত। বিয়ের জন্য চুক্তি হতো ২ লাখ রুপিতে। চুক্তি সই হওয়ার পর, একটি বিবাহ সম্মতিপত্র প্রস্তুত করা হয়। দম্পতিরা মন্দিরে বা বাড়িতে রীতি অনুসারে বিয়ে করে যা পুরোটায় নাটক।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, লুটেরি দুলহান খ্যাত ওই নারী তার বর এবং শ্বশুরবাড়ির সকলের সঙ্গে খুব সুন্দর এবং সরল আচরণ করতেন। তাদের বিশ্বাস জয় করার জন্য তিনি একটি বন্ধন তৈরির চেষ্টা করতেন পরিবারের প্রতিটি সদস্যের সাথে। পরে কয়েক দিনের মধ্যেই, তার পরিকল্পনার চূড়ান্ত কাজটি সম্পাদন করতেন তিনি। আর এটি করতেন খাবারে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে। এরপর গয়না, নগদ অর্থ এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যেতেন।
২৫ জন ভুক্তভোগীর মধ্যে একজন বিষ্ণু শর্মা, বিয়ের জন্য ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। গত ২০ এপ্রিল বিষ্ণু মধ্যপ্রদেশের অনুরাধাকে বিয়ে করেন। বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের উপস্থিতিতে হিন্দু রীতি অনুসারে বিয়ে সম্পন্ন হয় তার। দালাল পাপ্পু মীনার মাধ্যমে করা হয়েছিল এই বিয়ের ব্যবস্থা, যার জন্য বিষ্ণু তাকে দুই লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন।
বিয়ের দুই সপ্তাহের মধ্যে, অনুরাধা ১ লাখ ২৫ হাজার রুপি মূল্যের গয়না, ৩০ হাজার নগদ অর্থ এবং ৩০ হাজার রুপি মূল্যের একটি মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যান। বিষ্ণুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে, রাজস্থানের সওয়াই মাধোপুর পুলিশ অনুরাধার প্রতারণা ধরতে একটি ফাঁদ পাতে। আর এ পরিকল্পনায় সম্ভাব্য বর হিসেবে কাজ করেন একজন কনস্টেবল।
বিভি/টিটি
মন্তব্য করুন: