• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

বাবার মরদেহ বাড়িতে, চোখ মুছতে মুছতে পরীক্ষা দিলো তিন্নি!

রংপুর ব্যুরো

প্রকাশিত: ২১:০৯, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ফন্ট সাইজ
বাবার মরদেহ বাড়িতে, চোখ মুছতে মুছতে পরীক্ষা দিলো তিন্নি!

রংপুরের পীরগাছায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে হুমায়রা আক্তার তিন্নি। 

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রæয়ারি) সকালে পীরগাছা জেএন সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেয় সে। হুমায়রা আক্তার তিন্নি রাজবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তিন্নির বাবা আব্দুল ওহাব রতন পীরগাছা সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পীরগাছা বাজারে পানের আড়তদার ছিলেন। 

এর আগে সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন আব্দুল ওহাব রতন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত তাকে স্থানান্তর করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর সাড়ে ৪টায় তার মৃত্যু হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বজন ও এলাকাবাসীর মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন সড়কের পাশে ড্রেন নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন আগে খুঁড়ে রাখা হয়। একই সঙ্গে সড়কে রাখা হয় মাটি, বালু ও পাথর। সেখানে পানি জমে পিচ্ছিল হয়ে দুর্ভোগে পড়ে পথচারীরা।

সোমবার রাতে ওই সড়ক দিয়েই মোটরসাইকেলযোগে পীরগাছা বাজার থেকে অন্ধাম (দশগাঁ) গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন আব্দুল ওহাব রতন। এসময় উপজেলা পরিষদের সামনে পৌঁছালে দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে সড়কে ছিটকে পড়েন রতন। এতে তিনি গুরুতর আহত হলে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পীরগাছা সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হায়দার আলী বলেন, উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন ড্রেনের কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলেও সড়কে মাটি, বালু ও পাথর রাখা হয়েছে। সেখানে পানি জমে থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

তিন্নির চাচা আবু হানিফ বিপ্লব বলেন, বাবার মৃত্যুর পর তিন্নি মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেও স্বজনদের কথায় এসএসসি  পরীক্ষা দিতে যায় সে।

কেন্দ্রসচিব নজরুল ইসলাম বলেন, তিন্নির বাবার মৃত্যুর বিষয়টি আমরা সকালেই জানতে পেরেছিলাম। সে সবার সঙ্গে বসে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এক হাতে বারবার চোখ মুছছিল সে। আর অন্য হাতে পরীক্ষার খাতায় লিখেছে।

পরীক্ষা শেষে তিন্নি জানায়, বাবা আমাকে অনেক ভালোবাসতেন। বাবা চাইতেন আমি যেন পড়ালেখা করে অনেক বড় হই। তাই এমন অবস্থায়ও আমি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। বাবার আত্মাকে আমি কষ্ট দিতে চাই না।

পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হক সুমন বলেন, বাবা হারানোর কষ্ট নিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে তিন্নি। বিষয়টি কেন্দ্র সচিবকে জানানো হয়েছে। ঠিকাদারকে বলবো দ্রুত যেন সড়কের কাজ শেষ করা হয়।

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2