মানুষ-বেজির বন্ধুত্ব, ভালোবেসে নাম রেখেছে ‘লালু’

যান্ত্রিক জীবনে যেখানে মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক টেকে না সেখানে বন্য বেজির সঙ্গে বন্ধুত্ব সত্যিই বিস্ময়কর ঘটনা, যা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। সাধারণভাবে বন্য প্রাণী বেজি মানুষকে এড়িয়ে চললেও মাগুরা সদর উপজেলার কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নের কুল্লিয়া গ্রামের ভ্যান-সাইকেল মিস্ত্রি সাত্তার মোল্লার সাথে পরম ভালোবাসায় বন্য প্রাণী বেজির বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে, যা এখন পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
জানা গেছে, প্রায় দুই বছর আগে গ্রামের পুকুরপাড়ে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকা একটি বেজিছানা দেখতে পেয়ে প্রাণীটির প্রতি মায়া হওয়ায় বাড়িতে নিয়ে আসেন সাত্তার মোল্লা। অসুস্থ বেজিটির পরিচর্যা করে ধীরে ধীরে সুস্থ করে তোলেন। এরপর তার সঙ্গেই রয়েছে প্রাণীটি, ভালোবেসে নাম রেখেছেন ‘লালু’। ডাকলেই ছুটে এসে তার আশেপাশেই বিচরণ করে। কর্মস্থল ও বাড়ি সবখানেই সাথে থাকে লালু। বেজির সাথে এমন বন্ধুত্বের বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
বেজির সাথে সখ্যতার বিষয়ে জানতে চাইলে সাত্তার মোল্লা জানান, পশুটাকে পেয়ে মায়া হয় তার। বাড়িতে নিয়ে সুস্থ করেছেন। পরবর্তীতে একটি সখ্যতা গড়ে। এরপর দুই বছর ধরে পালন করছেন বেজিটিকে। তিনি বলেন, ভালোবেসে নাম রেখেছি লালু। লালু বলে ডাক দিলেই কাছে ছুটে আসে। নিজ হাতে তিন বেলা বাজার থেকে মাছ, মাংস, দুধ এবং কখনও কলা বেজিটিকে খাওয়ান তিনি। প্রতিদিন গড়ে খাবারে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা খরচ করেন। সবসময় সাথেই রাখেন লালুকে। তবে, দরিদ্রতার কারণে পর্যাপ্ত খাবারের খরচ জোগাতে কষ্ট হয় তার। তবুও, চরম মমতায় লালন পালন করছেন তিনি। বেজিটি এখন বড় হয়ে গেছে। কর্মস্থলের আশেপাশে এলাকায় ঘুরেও বেড়ায় সে। কিন্তু, কারও ক্ষতি করে না লালু।
স্থানীয়দের কাছে বিষয়টি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। ছোট বড় সকলের কাছেই পরিচিত ও প্রিয় হয়ে উঠেছে লালু। দিনের বেশিরভাগ সময় দোকানের আশপাশে ঘুরে বেড়ায়।
কুল্লিয়া বাজারে সাত্তার মোল্লার দোকানে বেজিটিকে দেখার জন্য তার ছবি তুলতে, ভিডিও নিতে ভিড় করে মানুষ। বেজি ও বন্যপ্রাণী এই বন্ধুত্ব দেখে আচার্য হন সকলেই। বিষয়টি উপভোগ করেন তারা। ভালোবাসা আর যত্ন পেলে হিংস্র বন্যপ্রাণীও যে হয়ে উঠতে পারে মানুষের সঙ্গী তারই এক অনন্য দৃষ্টান্ত সাত্তার মোল্লা ও বন্যবেজি লালুর বন্ধুত্ব।
বিভি/পিএইচ
মন্তব্য করুন: