চান্দিনায় এলডিপি মহাসচিবের গুলিতে আহত ২, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আটক

কুমিল্লার চান্দিনায় একই স্থানে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ও ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবকবলীগ এর ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান নিয়ে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় এলডিপি‘র মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ এর গাড়িতে হামলা করলে রেদোয়ান আহমেদ তার নিজস্ব শর্টগান থেকে গুলি করে। এতে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ এর দুই কর্মী আহত হন। 

এ ঘটনার পর চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হলে ড. রেদোয়ান আহমেদ নিজেকে নিরাপদে নিতে চান্দিনা থানায় গিয়ে আশ্রয় নেন। খবর পেয়ে  ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ কর্মীরা থানা ঘেরাও করে। পরে ড. রেদোয়ান আটক করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। তবে তার গাড়িটি অক্ষত অবস্থায় থানা হেফাজতে রয়েছে।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকাল ৫ টায়) উপজেলা সদরসহ থানা এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এছাড়া ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চান্দিনা পৌরসভা কার্যালয় সংলগ্ন রেদোয়ান আহমেদ কলেজ ক্যাম্পাস-২ মমতাজ আহমেদ ভবন এর সামনে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছিল। দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে রেদোয়ান আহমেদ গাড়ি নিয়ে ক্যাম্পাসের সামনে আসার পর কলেজ গেইটে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতারা রেদোয়ান আহমেদ এর গাড়ি থামিয়ে তার সাথে কথা বলে। কিছুক্ষণ পর রেদোয়ান আহমেদ গাড়ি ঘুরে চলে যাওয়ার সময় স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা ওই গাড়িতে তরমুজ দিয়ে ঢিল মারে। এসময় রেদোয়ান আহমেদ গাড়ি থেকে তার শর্টগান দিয়ে পরপর দুই রাইন্ড গুলি ছোঁড়েন।

গুলিতে আহত হয়েছেন- চান্দিনা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা রূপনগর এলাকার বাসিন্দা মো. জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে মাহমুদুল হাসান জনি সরকার (২৮)। সে কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ কর্মী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

অপরজন হলেন চান্দিয়ারা গ্রামের নূরুল ইসলাম এর ছেলে নাজমূল হোসেন নাঈম (২৮)। সে বরকইট ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মী। আহত দুই জনকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. রেদোয়ান আহমেদ জানান, আমাদের পূর্ব নির্ধারিত প্রোগ্রাম ছিল। আমাকে প্রধান অতিথি করে চিঠির মাধ্যমে পৌর এলডিপি কার্যক্রম পরিচালনা করে। এরই মধ্যে আমাদের প্রধান ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকে প্রোগ্রাম করার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। আমরা ক্যাম্পাস-২ মমতাজ আহমেদ ভবনে পুর্ব নির্ধারিত প্রোগ্রাম করার কথা। দুপুরে আমি ক্যাম্পাস-২ এর সামনে গেলে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের লোকজন আমার গাড়িতে হামলা করে। আমি আত্মরক্ষার্থে আমার লাইসেন্স করার শর্টগান দিয়ে গুলি চালাই। কার গায়ে গুলি লেগেছে আমি বলতে পারবো না। পরে আমি থানায় এসে আশ্রয় নেই। 

এ ব্যাপারে কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দাউদকান্দি সার্কেল) মো. ফয়েজ ইকবাল জানান, পাবলিক রোষানলে রেদোয়ান আহমেদ থানায় আশ্রয় নিতে আসলে আমরা তাকে আটক করি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে।