• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

গোপন সম্পর্ক গড়ায় ব্যবসায়ীকে হত্যা করলো কিশোর

ফরিদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:৪২, ২৭ নভেম্বর ২০২২

আপডেট: ১৮:৪৪, ২৭ নভেম্বর ২০২২

ফন্ট সাইজ
গোপন সম্পর্ক গড়ায় ব্যবসায়ীকে হত্যা করলো কিশোর

সমকামিতার জেরে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় মো. কাউসার হোসেন খান (৪০) নামে বিদেশফেরত এক বালু ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ১৫ বছরের এক কিশোর ও তার বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার কিশোর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। নিহতের মোবাইলের পোড়া অংশ বিশেষ, গায়ের জ্যাকেট, শার্ট-প্যান্ট, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু ও একটি মোটরসাইকেল আলামত হিসেবে উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

রবিবার (২৭ নভেম্বর) বিকালে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান (পিপিএম)।

গ্রেফতার ওই কিশোরের নাম সাফাওত হোসেন সিফাত। তার বাবার নাম শাহীন মোল্যা (৪২)। তাদের বাড়ি চরভদ্রাসন উপজেলা সদরের বিএসডাঙ্গী গ্রামে।

গত শুক্রবার রাতে চরভদ্রাসনের চর হরিরামপুর ইউনিয়নের বিশাই মাতুব্বরের ডাঙ্গীতে হত্যার পর বালি চাপা দিয়ে ফেলে রেখে যায়। পরেরদিন তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত কাউসার উপজেলা সদরের এমপিডাঙ্গী গ্রামের জালাল খানের ছেলে। তিনি বালির এবং কাঠের ফার্নিচারের ব্যবসা করতেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার ক্লু পেয়ে তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়। 

তিনি জানান, সিফাত পেশায় একজন একজন ইলেক্ট্রনিক্স মিস্ত্রি। কাজের সুবাদে তার সঙ্গে কাউসারের পরিচয় হয়। এরপর তাদের মাঝে সমকামিতার অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রায়ই এ কাজে লিপ্ত হতো তারা। যা সিফাতের মোটেই পছন্দ ছিল না। এজন্য কাউসার সিফাতকে ভয়ভীতিও দেখাতো।

পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার রাতে সিফাতকে ফোন করে ডেকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় কাউসার। সেখানে সিফাতকে সমকামিতা কাজে বাধ্য করলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে কাউসার তার পকেট হতে সুইচ চাকু বের করে সিফাতকে ভয়ভীতি দেখাতে থাকলে সিফাত তার হাত ধরে ফেলে এবং উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে কাউসারের গলায় চাকুর আঘাত লাগে। এতে সে মাটিতে উপুর হয়ে পড়ে গেলে সিফাত তার হাত থেকে চাকু কেড়ে নিয়ে তার পিঠের উপর বসে পিঠে, গলায়, গর্দানে ও মাথার পিছনে উপর্যুপরি আঘাত করে তার হত্যা করে। এ ঘটনার পর তার মোবাইল ফোন, মোটরসাইকেল ও চাকু নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
 
তিনি জানান, কাউসারকে হত্যা করে বাড়ি ফেরার পর তার মা-বাবা গায়ের রক্ত মাখা কাপড় দেখে তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে তাদের সবকিছু খুলে বলে। তখন তার বাবা শাহিন মোল্লা সিফাতের জামা কাপড় ধুয়ে ফেলে। জ্যাকেটটি বসত বাড়ির মাটির মধ্যে পুতে ফেলে এবং কাউসারের মোবাইল ফোন পুড়িয়ে ফেলে। আর হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু বাড়ির পাশে পুকুরের মধ্যে ছুড়ে ফেলে এবং কাউসারের মোটরসাইকেলটি ফরিদপুরের চানমারিতে রেখে যায়। 

সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ইমদাদ হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার, ওসি ডিবি মামুনুর রশীদ, চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিন্টু মন্ডল উপস্থিত ছিলেন।

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন: