দ্বিতীয় সংসারও টিকলো না, পরে ফেসবুকে বড় স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা
প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করেও সংসার করতে না পেরে ফেসবুকে ‘সরি’ লিখে আত্মহত্যা করেছেন অন্তর হুসাইন জারিফ (২৫) নামে এক যুবক।
আরও পড়ুন:
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জারিফ ওই গ্রামের ব্যবসায়ী মো. হুমায়ুন কবিরের একমাত্র ছেলে। এসএসসি পাশ করে সালথা কলেজে ভর্তি হলেও পড়াশোনায় এগোতে না পেরে জারিফ বাবার জুতা স্যান্ডেলের ব্যবসা দেখাশোনা করতো। এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বরও সে এভাবে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়।
জানা গেছে, বাবার বাড়িতে জারিফ একা একটি ঘরে ঘুমাতো। মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে সে ফসবুক ’সরি?’ লিখে একটি পোস্ট দেয়। এরপর বুধবার ভোর সাড় ৫টার দিকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ফাঁস দেয়। পরে পরিবারের লোকজন টের পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে দেখতে পেয়ে নিচে নামিয়ে আনে। ততক্ষণে সে মারা যায়।
জারিফের চাচাতো ভাই আবুল হাসান জানান, কয়েক বছর আগে জারিফ প্রথম বিয়ে করেন। তবে দাম্পত্য কলহের কারণে স্ত্রীকে ডিভোর্স দেন। পরে ফরিদপুর শহরের একটি মেয়ের সঙ্গে গোপনে তার দ্বিতীয় বিয় হয়। দুই মাস আগে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গেও তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।
তিনি বলেন, এরপর থেকে হাতাশায় নিমজ্জিত জারিফ গত ৩০ ডিসম্বর রাত ১টার দিক আত্মহত্যাকে সমর্থন করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তখন আমরা ওকে অনেক বুঝিয়ে ফিরিয়ে আনি।
স্থানীয়রা জানান, জারিফ পড়াশোনা বাদ দিয়ে বাবার জুতা-স্যান্ডেলের ব্যবসায় জড়িত হলেও ওই ব্যবসা এখন নেই। বেকার হয়ে সে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এরপর পারিবারিক কলহের কারণে স্বাভাবিক জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ক্রমেই।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ সাদিক বলেন, দুই মাস আগে স্ত্রী ডিভোর্স দিয়ে চলে যাওয়ায় হতাশাগ্রস্ত ছিল জারিফ। এই কারণ তিনি আত্মহত্যা করছন বলে জানতে পেরেছি। খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ফেসবুকে স্ট্যাটাসে নানা কথার মাঝে জারিফ লিখেছিলেন, 'মানুষ কখন আত্মহত্যা করে? যখন প্যানিক, অ্যাডিকশন, ডিপ্রেশন, স্ট্রেস একসাথে এসে আপনার মাথা খালি করে দেয়। শরীর অনবরত কাঁপতে থাকে। চোখে সব ঝাপসা লাগতে থাকে। মাথা প্রচণ্ড ভারী হয়ে থাকে। একসাথে লাখ লাখ কোটি কোটি জিনিস মাথায় এসে আবার একসাথে চলে যায়।'
আরও পড়ুন:
তিনি লিখেছেন, 'প্রতি সেকেন্ডে এমন হতে থাকে। ওই সময় কোনটা ঠিক কোনটা ঠিক না, এটা বোঝার ক্ষমতা থাকে না। এটা বোঝার ক্ষমতা থাকলে কেউ শখের বশে নিজেকে শেষ করতো না।'
আরও পড়ুন:
বিভি/টিটি
মন্তব্য করুন: