সেনজেন ভিসা জালিয়াতি: সিকিউরিটিম্যান, বুকিং অ্যাসিস্ট্যান্টসহ গ্রেফতার ৫

অনেকদিন ধরেই বিমানবন্দর কেন্দ্রিক বিভিন্ন সংস্থার নিম্ন পদস্থ কর্মচারী, কিছু জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান, এয়ারলাইন্স/ট্রাভেলিং এজেন্সির লোকজন এবং দক্ষ কম্পিউটার অপারেটররা একটা শক্তিশালী চক্র বানিয়েছে যারা সুযোগ বুঝে ট্যুরিস্ট ভিসায় অথবা ভুয়া ভিসায় বাংলাদেশ থেকে প্রাচ্য, মধ্যপ্রাচ্য এবং সেনজেনভুক্ত বিভিন্ন দেশে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময় বাংলাদেশি যুবকদেরকে পাচার করছে।
স্টার্টিং কান্ট্রি বাংলাদেশ থেকে ডেসটিনেটিং কান্ট্রিতে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে অনেক ট্রাফিকেড্ ভিকটিম/অপরাধী বাংলাদেশেই ধরা পরে। অনেকে মধ্যবর্তী ট্রানজেটিং কান্ট্রিতে ধরা পরে নাজেহাল/ গলা ধাক্কা খেয়ে বাংলাদেশের রিপ্রাটিয়েটেড্ হয়; অধিকাংশই ডেসটিনেটিং কান্ট্রিতে ধরা পরে জেল হাজতে মানবতার জীবন যাপন করে।
চক্রটির আন্তরিকতা এবং সক্ষমতার উপরে নির্ভর করে অল্প কিছু মানুষ হয়তো সফল হয়ে ডেসটিনিটিং কান্ট্রিতে বসতে পারে। বাদ বাকিরা মরীচিকার ধোঁয়াশায় সর্বস্ব হারায়। অনেকদিন ধরেই এই চক্রটিকে ধরার জন্য বিমানবন্দর এপিবিএন ইমিগ্রেশন এবং গোয়েন্দা পুলিশরা চেষ্টা চালাচ্ছিল।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরে বিমানবন্দর থানাধীন হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর, ঢাকা টার্মিনাল-২ এর পূর্ব পাশের বাদাম গাছের নিচে রাস্তার উপর গোপনে অবৈধভাবে জাল ভিসা ব্যবহার করে পরস্পর যোগসাজসে বিদেশে যাওয়ার পায়তারা করিতেছিল। বিষয়টি টের পেয়ে এপিবিএন এর সদস্যরা তাদেরকে কৌশলে নজরদারিতে রেখে মহানগর ডিবি পুলিশকে খবর দিলে এপিপিএন এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যৌথভাবে ডিবি পুলিশরা অভিযান চালিয়ে এই চক্রের দুই হোতা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও মোহাম্মদ কবির হোসেনসহ ৫জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত ওপর তিনজন হলো ৩. জানে আলম ৪. সাব্বির মিয়া ৫. সম্রাট সওদাগর।
গ্রেফতারকৃতদের নিকট হতে জব্দ তালিকা মোতাবেক তিনটি পাসপোর্ট, ৩ টি জাল ভিসা, ৪ টি জাতীয় পরিচয়পত্র, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশের স্পেশাল কার্ড, ৪টি মাস্টার/ ভিসা কার্ড, ৫টি মোবাইল, ৩টি ই টিকেট, ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসা সংশ্লিষ্ট ৫/৬ পাতা জাল ডকুমেন্ট, ১টি ড্রাইভিং লাইসেন্স, নগদ ১৬ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত ০৩ যাত্রী স্বীকার করেছে ১৬ থেকে ১৮ লক্ষ টাকা দালালদেরকে দিয়ে এই অবৈধ পথে ফ্রান্স, ইতালি এবং গ্রিসে যাচ্ছিল।
এই চক্রটির সাথে এয়ারলাইন্সের সিনিয়র কর্মকর্তা, স্টেশন ম্যানেজার, সুপারভাইজার ও জড়িত থাকতে পারে বলেই এরা অনায়াসে বোর্ডিং পাস ও টিকেট পেতে পারে। তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিভি/এসএমএফ/এজেড
মন্তব্য করুন: