• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস, সিভিল সার্জন অফিসে তালা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:১২, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

ফন্ট সাইজ
নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস, সিভিল সার্জন অফিসে তালা

কুষ্টিয়ায় ১১৫টি স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম দুর্নীতি ও প্রশ্ন ফাঁসের প্রতিবাদে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা। অভিযোগ উঠেছে, শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ভোর রাতে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. হোসেন ইমাম এর বাসভবন থেকে এই প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানায়, জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রায় ২৫-৩০ জন পরীক্ষার্থীকে দুটি অ্যাম্বুলেন্স ও সিএনজিতে করে আরএমও’র বাসায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাদের প্রশ্ন দেখিয়ে ও ডমি খাতায় পরীক্ষা নিয়ে প্রস্তুত করে তাদের পরীক্ষার হলে প্রবেশ করানো হয়।

তারিব রহমান প্রান্ত ক্রমিক ২৪১৭১৬০০২০৯ নামে এক সাধারণ পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ‘সীমাহীন নগ্নতায় এখানে নিয়োগ-বাণিজ্য ও দুর্নীতি হয়েছে এই পরীক্ষায়। কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের আরএমও ডা: হোসেন ইমাম ও তার বড় ভাই ২৫-৩০ জন পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে দাবিকৃত টাকা নিয়ে রাতভর তাদের বাসায় রেখে এই প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটলে সকালেই তার ভিডিও ফুটেজসহ স্যোসাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। একদিকে সাাধারণ পরীক্ষার্থীরা পরিশ্রম করে পরীক্ষা দিতে এসেছি, পূর্ব থেকেই নির্ধারিত এমন অনিয়ম করলে আমাদের পরীক্ষার কোনো মানে হয় না। শুনতে পেয়েছি এই
চাকরির জন্য চুক্তিবদ্ধ প্রার্থীদের নিকট থেকে ১৪ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেয়া হয়েছে। ভেবেছিলাম নতুন সরকারের আমলে দুর্নীতি কমবে কিন্তু বাস্তবে তা আরও বেড়েছে।

তবে এসব অভিযোগকে নাকচ করে শনিবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে নিয়োগ পরিক্ষার ফলাফল ঘোষণার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন এমন সংবাদ পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে সিভিল সার্জন গেটে অবস্থান নেন ভুক্তভোগী চাকুরী প্রত্যাশী পরীক্ষার্থী ও সাধারণ ছাত্র জনতা। পরে তারা সিভিল সার্জন গেটে ব্যানার টাঙ্গিয়ে দেয় এবং তালা দিয়ে দেয়। সেই সাথে নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের প্রতিবাদসহ পরীক্ষা বাতিল, এঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং পুনরায় পরীক্ষা গ্রহণের দাবী জানান আন্দোলনকারীরা।

এবিষয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. হোসেন ইমাম জানান, ‘শুক্রবার সকালে কয়েকজন ছাত্রীকে আমার বাসা থেকে বেরিয়ে যেতে দেখে সেটা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে আমাকে জড়িয়ে কুৎসা রটানো হচ্ছে। প্রকৃত অর্থে এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার সাথে আমি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনভাবেই পক্ষভুক্ত ব্যক্তি নই’।

তবে এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন ডা: শেখ কামাল হোসেন, ‘এখানে আমার কিছু করার নেই। আমি অসহায়। এই নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের জন্য একটি পরীক্ষা কমিটি গঠিত হয়েছে। উনারাই ভালো বলতে পারবেন আসলে কি হয়েছে। তবে এই অভিযোগের কোন সত্যতা আছে কি না সেটাও খতিয়ে দেখা হবে।

পরীক্ষা কমিটির অন্যতম সদস্য অতিক্তি জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি মো: মিজানুর রহমান মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘এবিষয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই’।

উল্লেখ্য, গত ২০২৪ সালের ২৩ এপ্রিল, রাজস্বখাত ভুক্ত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ১১-২০তম গ্রেডে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ০৭টি ভিন্ন ভিন্ন পদে মোট ১১৫জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। এ পদ সমূহে নিয়োগের জন্য কুষ্টিয়া শহরের ১১টি কেন্দ্রে গত শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2