• NEWS PORTAL

  • মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

পরকীয়া সম্পর্ক দেখে ফেলায় খুচিয়ে চোখ তুলে শিশুকে হত্যা চেষ্টা মামা-মামীর

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:৪০, ১৫ মার্চ ২০২২

আপডেট: ১৬:০২, ১৬ মার্চ ২০২২

ফন্ট সাইজ
পরকীয়া সম্পর্ক দেখে ফেলায় খুচিয়ে চোখ তুলে শিশুকে হত্যা চেষ্টা মামা-মামীর

ছোট মামা ও বড় মামীর পরকীয়া দেখে ফেলায় শিশু আলিফকে ধারালো ছুরি দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে চোখ তুলে ও  নৃশংসভাবে নির্যাতন করে হত্যার চেষ্টা করেছেন বলে সাতক্ষীরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মামী রানী বেগম ও ছোট মামা আশিকুজ্জামান । 

জানা গেছে, তাদের দুজনার পরকীয়রা দেখে ফেলায় সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার চরবালিথা গ্রামে ৭ বছরের শিশু আলিফ হোসেন ফারহানকে তারা এমন নৃশংসভাবে নির্যাতন করে। মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) বিকালে তারা সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রাকিবুল ইসলামের কাছে স্বীকারোক্তি মূলক এই জবানবন্দি প্রদান করেন। 

এরআগে সোমবার (১৪ মার্চ) রাতে দুই দফায় তাদের বাড়ি থেকে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে, শিশু আলিফ হোসেন ফারহানের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মঙ্গলবার সকালে ঢাকার জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিকালে তার দু’ চোখে অস্ত্রপচার করা হয়েছে। তবে, তার একটি চোখ বাঁচানো গেলেও অপরটি নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ডাক্তার।

আরও পড়ুন:

গ্রেপ্তারকৃত রানী বেগম (২২) দেবহাটা উপজেলার চরবালিথা গ্রামের আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী ও আশিকুর রহমান চরবালিথা গ্রামের হাচিম সরদারের ছেলে।

শিশুটির পিতা মঈনুদ্দিন সরদার জানান, তার প্রথম স্ত্রী শারমিন সুলতানা মারা যাওয়ার পর একমাত্র সন্তান আলিফ তার নানীর কাছে থাকতো। বর্তমানে আলিফ চরবালিথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে পড়াশুনা করতো। মাঝে মধ্যে তার মামী তাকে নির্যাতন করতো বলে তিনি জানতে পেরেছেন। অথচ আলিফ তার মামী রানী বেগমকে মা বলে ডাকতো। সোমবার দুপুর একটার দিকে শিশু আলিফকে রক্তাক্ত অবস্থায় খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধের পাশে একটি পানি বিহীন পুকুরে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ও পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। 

আলিফকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই চোখ খুচিয়ে, খুচিয়ে মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত জখম করে এবং তার চোখের আশেপাশে, মুখমন্ডলে, নাকে মুখে, ঠোঁটে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে বলে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক পারভিন আক্তার তাকে জানান বলেও জানান তিনি । 

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আলিফকে মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় চক্ষু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার বিকেল তিনটার দিকে আলিফের চোখ অপারেশন করা হয়। তিনি আরো জানান, ছোট মামা আশিক ও বড় মামী রানী বেগমের পরকীয়া দেখে ফেলায় আলিফকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে জখম করা হয় বলে তিনি জানতে পেরেছেন। 

দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ ওবায়দুল্লাহ জানান, সদর থানার পুলিশ ও দেবহাটা থানার পুলিশ যৌথভাবে রানী বেগমকে সোমবার রাত ৮টার দিকে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে দেবর আশিকুরের সঙ্গে রানী বেগমের পরকীয়ার ঘটনা দেখে ফেলায় আলিফকে ছুরি দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে জখম করা হয়েছে জানতে পেরে সোমবার রাত ১২টার দিকে আশিককে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনায় নির্যাতিত শিশুটির বাবা মঈনুদ্দিন সরদার বাদি হয়ে মঙ্গলবার রানী বেগম ও আশিকুজ্জামানকে আসামি করে থানায় একটি মামলা (৪নং) দায়ের করেছেন। বিকালে রানী ও আশিক জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রাকিবুল ইসলামের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।  জবানবন্দিতে আলিফকে হামলার জন্য একজন অপরজনকে দায়ী করেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। 

 


 

বিভি/এএস/রিসি 

মন্তব্য করুন: