প্রক্সি জালিয়াতি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে এসে তিনজন আটক

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রক্সি জালিয়াতির অভিযোগে তিনজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আটক ব্যক্তিরা হলেন— ত্রিশালের ওবায়েত হাসান আফিক, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানার পনির উদ্দিন খান পাভেল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী সালমান ফারদিন সাজিদ সিয়াম।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে চূড়ান্ত ভর্তি হতে এসে ধরা পড়ে ত্রিশালের বাসিন্দা ওবায়েত হাসান আফিক। তার গুচ্ছ ভর্তি রোল ২০১৬৯৭।
প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা যায়, চূড়ান্ত ভর্তি চলাকালীন সময়ে বিভাগে নিজের স্বাক্ষর ঠিক মতো দিতে না পারায়, প্রবেশপত্রের সাথে চেহারার অমিল ও ৭৬ তম হওয়ার পরেও বিজ্ঞান বিভাগের সহজ প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারায় সন্দেহ তৈরি হয় ভাইভা বোর্ডে থাকা শিক্ষকদের। পরে ফোন করে পনির উদ্দিন খান পাভেল নামের এক ব্যক্তিকে আনে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী।
জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে প্রক্সি জালিয়াতির মাধ্যমে গুচ্ছে ৭৬তম হয়েছে আফিক। স্বীকার করেন পাভেলের সাথে ভর্তি বিষয়ে চুক্তি হয়েছিল ১ লক্ষ টাকার। পরে চক্রের হোতা পনির উদ্দিন খানের সাথে সম্পর্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সালমান ফারদিন সাজিদ সিয়ামকে নিয়ে আসা হয়। জানা যায়, পনিরের সাথে ১ লক্ষ টাকার চুক্তিতে আরেক শিক্ষার্থীর প্রক্সি দিয়েছে সিয়াম।
জানা যায়, প্রক্সি শিক্ষার্থী কৌশিক কুমার চন্দ ইতিমধ্যেই ভর্তি হয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগে। কৌশিকের গুচ্ছ ভর্তি রোল ২০৪৩৯৩।
তবে পাভেল বলছে, বাবু নামের আরেকজনের নির্দেশে কাজ করেন তিনি। ভর্তি সংক্রান্ত সব বিষয় সে দেখে। আফিক ও কৌশিক — এই দুজনেরই প্রক্সি দেওয়া হয় জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে।
এই পুরো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, সকলের সহযোগিতায় সত্যটা যেন বের হয়ে আসে। ঘটনাটি জামালপুরে ঘটেছে, তবে সেটি আমাদের এখানে এসে সকলের স্বতঃস্ফূর্ত চেষ্টায় ধরা পড়েছে। তদন্ত করলে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সঠিক তথ্য উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যোগাযোগ থাকবে।
ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। মামলা শেষে শুক্রবার তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: