রাবিতে ৭ দিনের জন্য শাটডাউন স্থগিত করলো অফিসার সমিতি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭ দিনের জন্য শাটডাউন কর্মসূচী স্থগিত করেছে অফিসার সমিতি। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টায় অফিসার সমিতির সভাপতি মো. মোক্তার হোসেন ও কোষাধ্যক্ষ মো. মাসুদ রানা স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় অফিসার সমিতির কার্যালয়ে কর্মকর্তা, সহায়ক, সাধারণ ও পরিবহন সমিতির প্রতিনিধিদের নিয়ে এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবিসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ২৪ সেপ্টেম্বর বেলা ১টা থেকে চলমান ‘শাটডাউন’ কর্মসচি স্থগিত ঘোষণা করা হলো। আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে যদি দাবিসমূহ বাস্তবায়ন না হয় তাহলে পরবর্তীতে সকলকে নিয়ে বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
এর আগে, বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের লাগাতার শাটডাউনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা।
এসময় শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মুজাহিদ ফয়সাল বলেন, আজকের এই অচল অবস্থা পরিকল্পিত। একটি দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচন পিছিয়েছে। আবার শাটডাউনের মাধ্যমে রাকসুকে বানচাল করার চেষ্টা চলছে। শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। সেই রায় দেওয়ার পর তা সন্তোষজনক না হলে তারা পূনরায় আন্দোলন করতে পারে। তদন্তচলাকালীন এই শাটডাউন অযৌক্তিক।
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, পোষ্য কোটা শিক্ষার্থীদের জন্য একপ্রকার জুলুম। একটি গোষ্ঠী এ ইস্যু সামনে এনে তিনটি লক্ষ্য পূরণ করতে চায়—পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনা, পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট করা এবং রাকসু নির্বাচন বানচাল করা।
মানববন্ধনে কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও একাত্মতা প্রকাশ করেন। এতে শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি, সেক্রেটারিসহ প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, শাটডাউন কর্মসূচি চলমান রেখেছেন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের নেতাকর্মীরা। ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থী দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ দ্বিতীয় ব্যক্তিত্ব উপ-উপাচার্যকে লাঞ্ছনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এর আগেও নামধারী কিছু ছাত্র আমাদের সহকর্মীদের আটকে রেখেছিল। আমরা এ ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে এখন পর্যন্ত কোনো আশ্বাস পাইনি। তাই আমাদের দাবি আদায় না হওয়ার সময় পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’
জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রফেসর মো. আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনরত কর্মকর্তা -কর্মচারীরা কাজে ফিরেছে, দাপ্তরিক কার্যক্রম পূর্ণরূপে সচল হয়েছে।
এ বিষয়ে রাবি অফিসার সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে আমাদের মতবিনিময় সভা হয়েছে; আমরা জোরালোভাবে আমাদের দাবির কথা তাদেরকে জানিয়েছি। প্রশাসন আমাদের কাছে ৭ দিনের সময় চেয়েছেন। আমরা যদি এভাবে বৈষম্যের শিকার হই, এর সমাধান যদি আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে করা না হয়; এবং যাদের দ্বারা ২ জানুয়ারি ও ২০ সেপ্টেম্বর যে মব ভায়োলেন্স সৃষ্টি হয়েছিল—যার দ্বারা আমাদের প্রশাসনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তি মাননীয় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন), ৩ জন শিক্ষক ও ৩ জন কর্মকর্তা আহত হন, সেসব ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসীদের ৭ কর্মদিবসের মধ্যে বহিষ্কার আমরা দেখতে চাই। সন্ত্রাসীদের বিচার এবং প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা যদি আমরা ফিরে না পাই, সাত কর্মদিবস পরে আমরা আরো বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণ করবো।
বিভি/এসজি
মন্তব্য করুন: