পর্যটনের শীর্ষ মৌসুমে নেপাল, বিক্ষোভের কারণে নেই পর্যটক

ছবি: সংগৃহীত
নেপাল বর্তমানে তার পর্যটনের শীর্ষ মৌসুমে রয়েছে। নেপালে প্রতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই মৌসুম চলে। এই সময়েই দেশজুড়ে দেখা যায় বিদেশি পর্যটকের ঢল, বিশেষ করে হিমালয়ের বিখ্যাত ট্রেকিং রুটগুলোতে। তবে এ বছর পরিস্থিতি ভিন্ন। কয়েক দশকের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সহিংস বিক্ষোভ দেশটির পর্যটন খাতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। সম্প্রতি নেপালে দুর্নীতিবিরোধী একটি বিক্ষোভ ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। সহিংসতায় প্রায় ৭২ জন নিহত এবং ২,০০০-এর বেশি মানুষ আহত হন।
কাঠমান্ডুর সবচেয়ে ব্যস্ততম পর্যটন এলাকাগুলোর দোকান এবং রেস্তোরাঁগুলো এখন প্রায় ফাঁকা পড়ে আছে। নেপালের পর্যটন দপ্তর, হোটেল ব্যবসায়ী এবং ট্রেকিং সংগঠকরা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, পর্যটকদের সংখ্যা প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে। অনেক রিজার্ভেশন বাতিল হয়েছে। প্রাচীন সামগ্রীর বিক্রেতা ও হোটেল মালিকরা বলছেন, তাদের ব্যবসায় প্রায় ৬০ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং জাপানের মতো দেশের পর্যটকরা সাধারণত নেপালের রাজধানী থেকেই তাদের যাত্রা শুরু করে থাকেন। তবে, পার্লামেন্ট ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর অনেক দেশই তাদের নাগরিকদের নেপালে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে।
নেপালের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় ১২ লাখ পর্যটক দেশটিতে ভ্রমণে আসে। এই পর্যটন খাত থেকে অর্জিত আয় দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের ৮ শতাংশ অংশ জোগান দেয়, যা ৪০০০ কোটি মার্কিন ডলারের সমান। এদিকে, নেপাল পর্যটন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, নেপালের সাম্প্রতিক কিছু পরিস্থিতির কারণে বিনিয়োগকারীদের কাছে নেতিবাচক বার্তা পৌঁছাতে পারে।
তবে, নেপালি কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা আশাবাদী, পর্যটকরা আবারও নেপালে ভ্রমণে আসবেন। যদিও এখনও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে। ২০২৬ সালের ৫ই মার্চ দেশটিতে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্বে রয়েছেন সুশীলা কার্কি, যিনি ধীরে ধীরে দেশকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। তবে, এখনও কাঠমান্ডুর কিছু এলাকায় আগুনের পোড়া ক্ষত রয়ে গেছে। পুড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ সরানোর কাজ অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: