• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

শত্রু বিষ দাঁত বসিয়েছে, আমি অবাক হয়ে দেখেছি: জাহাঙ্গীর

প্রকাশিত: ১৫:৫০, ২৭ জানুয়ারি ২০২৩

আপডেট: ১৪:৪৯, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩

ফন্ট সাইজ

একটি ভুয়া চিঠি দিয়ে মেয়রের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এটি অন্যায়, অমানবিক। বাংলাভিশনের সঙ্গে একান্ত আলাপে এভাবেই বলছিলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি বলেন, ‘এই দল থেকে আমাকে বের করে দেওয়া হয়েছে একথা আমি একবারের জন্যও বিশ্বাস করবো না। কারণ রক্তে-মাংসে এই দলের সঙ্গে জড়িত আমি। পিতা-মাতার হাত ধরে ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে আমি সংগঠন করেছি, অন্যদেরও সংগঠিত করেছি। ২০১৯ বা ২০ সালে এডিট করে বা বিভিন্ন শব্দকে যোগ করে কথার মূল অংশকে বাদ দিয়ে আংশিক অংশ ব্যবহার করে ফেসবুক ইউটিউবে আমার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়েছে। যখন প্রচারণা চালানো হয়েছে তখন আমি ছিলাম দেশের বাইরে।পরবর্তীতে একপক্ষের আলোচনা পার্টির হাইকমান্ডের কাছে পৌঁছেছে। আমাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। আমি মাথা পেতে নিয়েছি। বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এক সময় সত্য জানবেন। এই সাহস এবং বিশ্বাস আমার ছিল। এই সৎসাহস নিয়ে মানুষের কাছে গিয়েছি। সরকারের জন্য ইতিবাচক কাজে অংশ নিয়েছি।’

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি এলাকার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করবো। যাদের আর্থিক সমস্যা রয়েছে, কর্মসংস্থান এবং শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ ভালো কিছু করতে পারে সেগুলোই গুরুত্ব দিবো।’

আক্ষেপ নিয়ে বলেন, ‘যারা আপন ছিলেন তারা দূরে সরে গেছে। লুটপাটকারীরা তাদের কাজে নেমে গেছে। আমার কাছের লোকেরা ভয়ে চুপ হয়ে গেছে। এই এক বছর প্রকাশ্য দলের কাজে অংশ নিইনি। কিন্তু নেতাকর্মীদের মনোবল ধরে রাখতে কাজ করেছি।’

এখান থেকে তার শিক্ষার কথাও জানালেন গাজীপুরের সাময়িক বরখাস্ত মেয়র বলেন, ‘ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে। লোভীরা তাদের রূপ পরিবর্তন করে। পরবর্তীতে আমার কাজ সতর্ক হয়ে করতে হবে। অপরাধীকে দিয়ে কাজ করাতে হবে। কিন্তু বিশ্বাস করা যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর আমি সবাইকে নিয়ে কাজ করেছি। প্রতিদিন আমার সভাপতির খোঁজ নিয়েছি। তার আর্থিক মানসিক সব জায়গায় সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাদের মনে কি ছিল জানি না। শত্রু  কখনও আপন হয় না। সামাজিকভাবে চলতে হলে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হয়। সেই কাজটিই করেছিলাম। ভেবেছিলাম দেশটা সবার, শহরটাও সবার। সে জন্য শত্রুর যে কাজ শত্রু বিষ দাঁত বসিয়েছে, আমি অবাক হয়ে দেখেছি। তারপরও বলি, যারা খারাপ তারা যেনো ভালো হয়ে যায়।’

মেয়রের পদ ফিরে পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন গাজীপুর মহানেগরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তবে এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, ‘দীর্ঘ ১৪ মাস দায়িত্বে নাই। কিন্তু কোনো অনিয়ম আমার বিরুদ্ধে বের করতে পারেননি। আমাকে একটি ভুয়া চিঠি দিয়ে মেয়রের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে দেওয়া হয়েছে। এটা অন্যায়, অমানবিক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ ন্যায়বিচার পাবো।’

তিনি বলেন, ‘আমি মেয়র থাকার সময়ে যেসব ঠিকাদাররা অনিয়ম করতেন তাদের বিল দিতাম না। এখন যে দায়িত্বে আছেন তিনি এসব অন্যায়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলছেন। নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া সিটি করপোরেশন কে চালাবেন? একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর কীভাবে মেয়রের দায়িত্ব পালন করবেন? ২৫ থেকে ৩০ হাজার বেতন দিয়ে কিভাবে স্ত্রী ও সন্তানদের  আমেরিকায় রাখেন। সেখানে তাঁর বাড়ি-গাড়ি আছে। এত টাকা পেলেন কোত্থেকে? এ ছাড়া আগের মেয়র প্রয়াত অধ্যাপক আবদুল মান্নানকেও নাস্তানাবুদ করেছিলেন কিরণ। আবদুল মান্নানের নামে একের পর এক মামলা করে ২৭ মাস জেল খাটিয়ে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হয়েছিলেন। কিরণ আগে জাতীয় পার্টির রাজনীতি করতেন, এখন আওয়ামী লীগের। জনপ্রতিনিধির চেয়ারকে যদি কলঙ্কিত করা হয়, তাহলে ভভিষ্যৎ যার যতো বড় চেয়ার হোক তারা সন্মানটুকু পাবেন না। তাদের সন্তানরা প্রশ্ন করবে এই অন্যায়ের জবাব কি?’

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘টানা প্রায় ১৪ মাস মেয়র পদে নেই জাহাঙ্গীর আলম। এই সময়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দায়িত্বে না থাকায় গাজীপুর নগরবাসী নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত।’

এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'আমি ইমান-আমলের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। অন্যায় কিছু করি নাই। তদন্ত কমিটিও অনিয়ম খুঁজে পায়নি। তাহলে কেন আমি পদ ফিরে পাবো না?'

তিনি বলেন, 'প্রায় পাঁচ লাখ নগরবাসী ভোট দিয়েছেন। তাঁদের প্রত্যাশা কে পূরণ করবে? অথচ নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়েও আমি সেই মানুষের জন্য কিছুই করতে পারছি না।'

জাহাঙ্গীর আলম আক্ষেপ করে বলেন, ‘এটা আমার জনগণের দেওয়া অধিকার, এই অধিকার থেকে কেউ আমাকে বঞ্চিত করতে পারে না।’

বিভি/এনএ

মন্তব্য করুন: