ইউরোপীয় দেশগুলিতে হসপিটালিটি সেক্টরে শ্রমিকের ঘাটতি প্রায় ২.৫ মিলিয়ন

পর্যটন শিল্প ইউরোপের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা কর্মসংস্থান ও জিডিপিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। তবে সাম্প্রতিক রিপোর্টগুলো ইঙ্গিত করে যে, এই খাতে শ্রমিকের ঘাটতি ক্রমবর্ধমান, যা শেঞ্জেন এবং নন-শেঞ্জেন উভয় ধরনের দেশকে প্রভাবিত করছে। এই রিপোর্টে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পর্যটন খাতে চলমান শ্রমিকের ঘাটতির সার্বিক চিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে।
শেঞ্জেন দেশগুলিতে শ্রমিকের ঘাটতি
১. স্পেন: স্পেনের পর্যটন খাতে মোট শ্রমিক ঘাটতির সংখ্যা আনুমানিক ১০০,০০০ থেকে ১২০,০০০ জন।
২. ইতালি: ইতালিতে পর্যটন খাতে মোট শ্রমিক ঘাটতির সংখ্যা আনুমানিক ২২০,০০০ থেকে ২৫০,০০০ জন।
৩. ক্রোয়েশিয়া: ক্রোয়েশিয়ার পর্যটন খাতে প্রায় ৫০-৫৫ হাজারেরও বেশি কর্মীর ঘাটতি রয়েছে।
৪. জার্মানি: জার্মানির পর্যটন খাতে প্রায় ১ লক্ষেরও বেশি কর্মীর ঘাটতি রয়েছে।
৫. ফ্রান্স: ফ্রান্সের পর্যটন শিল্পে মোট শ্রমিক ঘাটতির সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজারেরও বেশি।
৬. পর্তুগাল: পর্তুগালের পর্যটন খাতে প্রায় ৫০,০০০ থেকে ৬০,০০০ শ্রমিকের অভাব রয়েছে।
৭. গ্রিস: গ্রিসের পর্যটন খাতে মোট শ্রমিক ঘাটতির সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশী কর্মী।
৮. নেদারল্যান্ডস: নেদারল্যান্ডসের পর্যটন খাতে মোট শ্রমিক ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৫২ হাজারেরও বেশী কর্মী।
৯. বেলজিয়াম: বেলজিয়ামের পর্যটন খাতে মোট শ্রমিক ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৫১ হাজারেরও বেশী কর্মী।
১০. লুক্সেমবার্গ: লুক্সেমবার্গের পর্যটন খাতে মোট শ্রমিক ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশী কর্মী।
১১. অস্ট্রিয়া: অস্ট্রিয়ার পর্যটন খাতে মোট শ্রমিক ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৫২ হাজারেরও বেশী কর্মী।
১২. স্লোভেনিয়া: স্লোভেনিয়া পর্যটন খাতে প্রায় ৫০,০০০-৬০,০০০ কর্মীর অভাব রয়েছে।
১৩. স্লোভাকিয়া: স্লোভাকিয়া পর্যটন খাতে প্রায় ৫০,০০০ কর্মীর অভাব রয়েছে।
১৪. ফিনল্যান্ড: ফিনল্যান্ডের পর্যটন খাতে মোট শ্রমিক ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৫২,০০০-৫৫,০০০ কর্মী।
১৫. ডেনমার্ক: ডেনমার্কের পর্যটন খাতে ৫৮,০০০-৬০,০০০ শ্রমিকের ঘাটতি রয়েছে।
১৬. নরওয়ে: নরওয়ে পর্যটন খাতে ৫৮,০০০-৬০,০০০ শ্রমিকের ঘাটতি রয়েছে।
১৭. সুইডেন: সুইডেনের পর্যটন খাতে মোট শ্রমিক ঘাটতির সংখ্যা প্রায় ৫২,০০০ থেকে ৫৫,০০০ জন।
১৮. আইসল্যান্ড: আইসল্যান্ডের পর্যটন খাতে মোট শ্রমিক ঘাটতির সংখ্যা প্রায় ৫০,৫০০-৫৩,০০০ জন।
১৯. রোমানিয়া: রোমানিয়ার পর্যটন খাতে মোট শ্রমিক ঘাটতির সংখ্যা প্রায় ৫৫,০০০ থেকে ৬০,০০০ জন।
২০. বুলগেরিয়া: বুলগেরিয়া পর্যটন খাতে মোট শ্রমিক ঘাটতি প্রায় ৫৫,০০০ - ৫৮,০০০ এর মধ্যে।
২১. সাইপ্রাস: সাইপ্রাসের পর্যটন খাতে মোট শ্রমিক ঘাটতির সংখ্যা প্রায় ৫৭,০০০ থেকে ৫৮,০০০ জন।
২২. মাল্টা: মাল্টার পর্যটন খাতে মোট শ্রমিক ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৫৭,০০০ থেকে ৫৮,০০০ জন।
২৩. সুইজারল্যান্ড: সুইজারল্যান্ডের পর্যটন খাতে শ্রমিক ঘাটতির মোট পরিমাণ প্রায় ৫৫,০০০-৬০,০০০ কর্মী।
২৪. পোল্যান্ড: পোল্যান্ডের পর্যটন খাতে মোট শ্রমিক ঘাটতি প্রায় ৫৩,০০০-৫৪,০০০ কর্মী।
নন-শেঞ্জেন দেশগুলিতে শ্রমিকের ঘাটতি
১. নর্থ মেসিডোনিয়া: পর্যটন খাতে নর্থ মেসিডোনিয়ার মোট শ্রমিক ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ১,০০,০০০ থেকে ১,১০,০০০ জন।
২. সার্বিয়া: পর্যটন খাতে সার্বিয়ার মোট শ্রমিক ঘাটতির পরিমাণ আনুমানিক ৫০,০০০ থেকে ৫৫,০০০ জন।
৩. মন্টেনেগ্রো: পর্যটন খাতে মন্টেনেগ্রোতে মোট শ্রমিক ঘাটতির সংখ্যা প্রায় ৫৫,৫০০ জন।
৪. রাশিয়া: রাশিয়ার পর্যটন খাতে সামগ্রিকভাবে প্রায় ৮০,০০০ থেকে ৯৫,০০০ কর্মীর ঘাটতি রয়েছে।
৫. আজারবাইজান: আজারবাইজানে পর্যটন খাতে শ্রমিক ঘাটতির সংখ্যা প্রায় ৬৫ হাজারেরও বেশি কর্মী।
৬. বেলারুস: বেলারুসের পর্যটন খাতে আনুমানিক মোট শ্রমিক ঘাটতি ৫৫,০০০ থেকে ৫৯,০০০ জন।
৭. তুরস্ক: তুরস্কে পর্যটন খাতে শ্রমিক ঘাটতির মোট পরিমাণ আনুমানিক ৮৩,০০০ থেকে ৮৫,০০০ জন।
৮. কসোভো: কসোভোর পর্যটন খাতে মোট শ্রমিক ঘাটতি প্রায় ৫০,০০০ থেকে ৫৬,০০০ জন।
৯. আলবেনিয়া: আলবেনিয়ার পর্যটন খাতে শ্রমিক ঘাটতির সংখ্যা আনুমানিক ৫১,০০০ থেকে ৫৫,০০০ জন।
১০. আর্মেনিয়া: আর্মেনিয়ার পর্যটন খাতে প্রায় ৫০,০০০ থেকে ৫৫,০০০ শ্রমিকের ঘাটতি রয়েছে
১১. যুক্তরাজ্য: যুক্তরাজ্যের পর্যটন খাতে মোট শ্রমিক ঘাটতির সংখ্যা প্রায় ১২০,০০০ এর কাছাকাছি।
শেঞ্জেন এবং নন-শেঞ্জেন উভয় ইউরোপীয় দেশেই পর্যটন খাতে, বিশেষ করে পর্যটন পেশায় দক্ষ সেবামূলক কর্মীদের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য শ্রমিক সংকট দেখা যাচ্ছে। কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক পর্যটনের দ্রুত পুনরুদ্ধার এবং সেবার চাহিদা বৃদ্ধির ফলে এই ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে অনেক প্রতিষ্ঠান বিদেশি কর্মী নিয়োগের দিকে ঝুঁকছে। ইউরোপীয় বৈচিত্র্যময় এই দেশগুলোতে সারা পৃথিবীর পর্যটক বেশি মাত্রায় আগ্রহ দেখাচ্ছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিশেষ সহকারী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, সচিব, বিএমইটির ডিজি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, সচিব, মেসিডোনিয়ার কুটনৈতিক দায়িত্বপ্রাপ্ত হাই কমিশনার, এম্বাসী লেবার উইং সকলকে আন্তরিক হতে হবে ইউরোপীয় শেঞ্জেন নন-শেঞ্জেন দেশগুলোর স্কিল শ্রমবাজার ধরতে।
লেখক: শহিদুল ইসলাম সাগর
চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স এসোসিয়েশন
মন্তব্য করুন: