• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

কাতারকে জাতে তোলার বিশ্বকাপে পশ্চিমাদের স্বার্থ

মুস্তফা কামাল আখতার

প্রকাশিত: ১৭:৩২, ২৮ নভেম্বর ২০২২

ফন্ট সাইজ
কাতারকে জাতে তোলার বিশ্বকাপে পশ্চিমাদের স্বার্থ

কাতার বিশ্বকাপ আয়োজন করে 'জাতে' উঠতে চেয়েছিল। পুঁজিবাদী দুনিয়ায় এভাবেই কোনো মেগা ইভেন্ট সাকসেসফুল করলে 'উন্নত বিশ্বের' তকমা মেলে। দক্ষিণ কোরিয়া অনেক আগেই ব্যবসা, শিল্প, সমরাস্ত্র মজুদের রেশিওতে উন্নত ছিল, কিন্তু তকমা জোটেনি। ২০০২ সালে জাপানের সঙ্গে যৌথ বিশ্বাকাপ আয়োজন করে আপগ্রেডেড হয়। কাতারও সে পথে হাঁটতে গিয়ে ঘুষটুস দিয়ে হোস্টিং বাগিয়ে ফিফার সব শর্ত মেনে নিয়েছিল। ফিফাও 'মুসলিম কান্ট্রি' হিসাবে কি কি করা যাবে না জেনে বুঝেই তাবু গেঁড়েছিল।

 

এখন কাতার যখন দেখল বিশ্বকাপের 'ঐতিহ্য' পালন করতে গেলে ইসলামি রিসালাত থাকে না। দেশের মানুষের কাছে মুসলিম কওমের কাছে 'ছোট' হতে হয়। তাই একেবারে ইলেভন্থ আওয়ারে এসে ইসলামি কোড অব কন্ডাক্ট জারি করছে, যেন কেউ আর 'প্রত্যাখ্যান' করার সময় না পায়।

ফিফাসহ ফুটবল সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা আঙ্গুল কামড়াচ্ছে। তা কামড়াক। কাতার 'ইসলামি দেশ' বলে এসব করছে? মোটেও না। ৪,৪৭১ বর্গমাইলের এই দেশটি অনেক দেশের প্রদেশ থেকেও ছোট। ৩০ লাখ মত জনসংখ্যা ঢাকার একটা পাড়া-মহল্লার সমান। তার পরও তেলের সমুদ্র তাদের বড়লোক করেছে। সেটাও মূল নয়। মূল কারণ কাতার পশ্চিমা পুঁজিবাদী গোষ্ঠির 'রেসের ঘোড়া'। কাতারকে 'বেইজ' করে পশ্চিমারা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়ি ঘোরায়। তাই কাতারকে 'নিজেদের জাতে তোলার' প্ল্যানেই এখানে বিশ্বকাপের আয়োজন। এর সঙ্গে বিশ্বকাপের শ্রীহানী, অঙ্গহানীর সম্পর্ক নেই। পুরো ব্যাপারটা কর্পোরেট ডিল।

কাতার কি আরবীয় মুসলিম সংখ্যাগুরু দেশ? মোটেও নয়। জনজাতির হারটা দেখলে বোঝা যাবে এখানে কোন ইজম সবচেয়ে বেশি ক্রিয়াশীল?

25.0% ভারতীয় ২৫%
15% নেপালি ১৫%
12.1% কাতারি ১২.১%
10% বাংলাদেশি ১০%
6.2% সোমালি ৬.২%
4% শ্রীলঙ্কান ৪%
3.8% পাকিস্তানি ৩.৮%
30.00% অন্যান্য ৩০.০০ %
(সূত্র: উইকিপিডিয়া)

১২.১% কাতারি কারা? তাদের সংস্কৃতি কী? এই ক্রনোলজি ঘাটার দরকার নেই। ফিফার অসৎ কর্মকর্তারা সব জেনেবুঝেই এখানে আয়োজন করছে। কাতারও বিশ্বকাপে কী কী হয় তা জেনে-বুঝেই হোস্ট হয়েছে। সুতরাং বাকস্বাধীনতা, পোশাকের স্বাধীনতা, পানাহারের স্বাধীনতা খর্ব হলেও তাদের কিছু আসে-যায় না, কারণ মাঠে একজন দর্শকও না থাকলে কাতারের সমস্যা নেই। তারা টিকিট বেচে খরচ ওঠাবে না। ডিলটা অন্য জায়গায়। দুঃখটা হলো তার সাথে ফুটবলের কোনো সম্পর্ক নেই। ফুটবলের বিশ্বকাপকে বলা হয় The greatest show on earth! সেই গ্রেটেস্ট শো-যে এবার চরম ধাক্কা খেয়ে কিছু ব্যক্তির খামখেয়ালিতে বিষাদময় হয়ে উঠল সেটাই দুঃখ। ফুটবল বিশ্বকাপ এবার আর সকল জাতির মানুষের মেলবন্ধন রইল না।

যারা জলসার আয়োজক হতে পারে তাদেরকে ওয়ার্কশপ আয়োজন করতে দিলে এমনই হওয়ার কথা। 

মন্তব্য করুন: