মে দিবস উপলক্ষে যা বললেন রিজভী
ছবি: প্রেস ব্রিফিংয়ে রিজভী
বাংলাদেশে আজ সবচেয়ে অবহেলিত শ্রমিক সমাজ। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জীবনযাত্রার ব্যায় বৃদ্ধি, বাজার মূল্যের সঙ্গে অসংগতি, কম মজুরীতে শ্রমিক সমাজের এখন বেঁচে থাকাই কষ্টকর। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী ১২ কোটি ভোটারের মধ্যে ৭ কোটি ৩৫ লাখ শ্রমিক। শ্রমিক সমাজের মর্যাদার জন্য একটি দিন বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে- মে দিবস। এছাড়াও সরকারের ফ্যাসিবাদি মনোভাব ও অগণতান্ত্রিক শ্রম আইনে মালিক পক্ষের স্বার্থকে প্রধান্য দেওয়ায় শ্রমিক সমাজ সর্বত্র হয়রানিসহ নানাবিধ অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়া ও অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার থেকে দূরে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। উপরোক্ত প্রস্তাবিত অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল ২০২৩ এর মাধ্যমে শ্রমিক কর্মচারীদের দাবি উত্থাপনের অধিকারকে আইন করে বন্ধ কারার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বুধবার ১ মে, ঐতিহাসিক মহান মে দিবস। বিশ্ব স্বীকৃত আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল বুধবার দুপুর আড়াইটায় নয়াপল্টন বিএনপি অফিসের সামনে শ্রমিক সমাবেশ করবে এবং সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য শ্রমিক র্যালি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ করবে। এ বিষয়ে শ্রমিক দলের পক্ষ থেকে পুলিশ কমিশনার বরাবর পত্র দিয়ে তাদেরকে অবহিত করা হয়েছে।
রিজভী বলেন, চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে শ্রমজীবী মানুষের জীবন আজ ওষ্ঠাগত। সরকারের-গ্যাস বিদ্যুৎ এর দাম বৃদ্ধির ফলে এর প্রভাব শুধু সাধারণ জনগণের উপরেই নয়, উৎপাদন খাত শিল্প কলকারখানাগুলোতেও পড়েছে। ফলে বন্ধ হচ্ছে কলকারখানা। সরকারি খাতের পাটকল ও চিনিকলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে বেকার হয়েছে লাখ লাখ শ্রমিক। মানবেতর পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের পরিবার। টাকার অভাবে তাদের সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধ হচ্ছে।
অন্যদিকে সরকারি দপ্তরগুলোতে নিয়মিত পদ বিলুপ্ত করে আউট সোর্সিং নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ফলে শ্রমের ক্ষেত্রগুলো ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে শিক্ষিত লাখ লাখ বেকার।
তিনি আরও বলেন, বৈদেশিক মুদ্র অর্জনকারী সোনালী আঁশ খ্যাত পাটের উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ, বাংলাদেশের মানুষের খাদ্য তালিকার অন্যতম উপাদান আমাদের দেশে তৈরি স্বাস্থ্যসম্মত চিনির পরিবর্তে কেমিক্যাল যুক্ত বিদেশি চিনির ওপর বিদেশ নির্ভরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশ হারাচ্ছে শ্রমজীবী মানুষের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা।
রিজভী বলেন, ইতোমধ্যে শ্রমিক দলের পক্ষ থেকে ১২ দফা দাবি সম্বলিত লিফলেট, পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন করা হয়েছে। মহান মে দিবস পালনের লক্ষ্যে শ্রমিক দলের পক্ষ থেকে গঠিত পাঁচটি উপ-কমিটি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি, স্মরণকালের ভয়াবহ তাপদাহ উপেক্ষা করে অধিকার প্রতিষ্ঠার এই মহান দিনে শ্রমজীবী মানুষ তাদের দুঃখ কষ্ট যাতনার প্রতিবাদে শ্রমিক দলের সমাবেশে উপস্থিত হবেন।
বিভি/এমআর
মন্তব্য করুন: