‘বিচার, সংস্কার, নির্বাচন এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জাতীয় স্বার্থ’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বিচার, সংস্কার, নির্বাচন - এই তিন হলো আমাদের দেশের এই মুহূর্তের সবচেয়ে বড় স্বার্থ। পতিত ফ্যাসিস্টের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য, গণঅভ্যুত্থানকে রক্ষা করার জন্য, আমাদের ন্যূনতম ঐকমত্য রক্ষা করে এই তিনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উত্তরণ ঘটাতে হবে৷
শনিবার (২৬ জুলাই) বিকালে টঙ্গীর মিলগেট নোয়াখালী সমিতি অডিটোরিয়ামে গণসংহতি আন্দোলন গাজীপুর জেলার উদ্যোগে শহীদ স্মরণে জুলাই সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই কথা বলেন তিনি৷
জোনায়েদ সাকি বলেন, নির্বাচন হলো রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সকল নাগরিককে যুক্ত করার গণতান্ত্রিক পদ্ধতি। জনগণকে যুক্ত করে সংস্কার করতে হলে নির্বাচন লাগবে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা শুরু থেকেই বলছি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম কাজ হলো, শহীদদের মর্যাদা দেওয়া, আহতদের সুচিকিৎসা, শহীদ পরিবার ও আহতদের জীবনের দায়িত্ব নেওয়া। আমরা দুঃখের সাথে দেখছি, এক বছর পার হলেও এখনও শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা হয়নি, তাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদার ব্যাপারে সরকার কী করবে তা এখনও ঠিক হয়নি। শহীদ পরিবার ও আহতদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত আমরা অভিযোগ পাচ্ছি। আমরা সরকারকে বলবো, এই দায়িত্ব পালনে আপনাদের অবহেলা ও দীর্ঘসূত্রিতা জনগণ ভালোভাবে নিচ্ছে না। আপনাদের দায়িত্ব দ্রুততম সময়ে পালন করুন ও বাস্তবায়ন করুন।
তিনি আরও বলেন, আমরা ভোট দিয়ে যাকে নির্বাচিত করব সে যদি আমাদের ওপর ছড়ি ঘোরায়, তাহলে সেখানে ফ্যাসিবাদের জন্ম হয়। আমাদের ভোটে নির্বাচিতরা যদি আমাদের কাছে জবাবদিহি করে, তাহলেই বোঝা যাবে গণতন্ত্র এসেছে। তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী ক্ষমতাব্যবস্থা বদলাতে হলে গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গায় হাত দিতে হবে, সেটা হলো অর্থনীতিতে। যেখানে অনেকে হাত দিতে চায় না। এখানে যদি লুটপাটের অর্থনীতি রেখে দেওয়া হয়, যদি চুরি-দুর্নীতি-লুটপাটের ক্ষেত্র রাখেন, তাহলে কেবল রাষ্ট্রের অন্য জায়গায় পরিবর্তন কোনো কাজে আসবে না।
জোনায়েদ সাকি বলেন, আমাদেরকে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বদলাতে হবে। লুটপাটের অর্থনীতির বদলে এদেশে উৎপাদনশীল অর্থনীতি তৈরি করতে হবে। সমস্ত মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের সম্পদ যারা তৈরি করে, সম্পদের বণ্টনে তাদের ন্যায্য হিস্যা থাকতে হবে। আমাদের নীতি হবে, আমাদের সমস্ত শিশুকে শিক্ষিত করে তোলা, কর্মক্ষম করে তোলা, মানবিক করে তোলা।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দীপক রায় বলেন, বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন একসাথে চলতে হবে! আসুন একসাথে কাজ করে গড়ে তুলি জনগণের বাংলাদেশ, অধিকার ও মর্যাদার বাংলাদেশ, বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের আহবায়ক আমজাদ হোসেন বলেন, গাজীপুরকে সকলের জন্য স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে আমাদেরকে নতুনভাবে জনগণের নিজস্ব রাজনৈতিক শক্তিতে এখানে সংগঠিত করতে হবে। নদী ও বায়ুদূষণ, ভূমিদখল রোধসহ গাজীপুর জেলার নাগরিক অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ গাজীপুরের আহবান জানান তিনি।
গণসংহতি আন্দোলন গাজীপুর জেলার সদস্য সচিব ফারুক মণ্ডলের সঞ্চালনায় সমাবেশে শহীদ পরিবারের সদস্য, জুলাই যোদ্ধা ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি আরও বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর পালোয়ান, সদস্য সাহাবুদ্দিন, কালীয়াকৈর থানা আহ্বায়ক ফারুক মন্ডলসহ জেলা ও থানার নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ।
বিভি/এআই
মন্তব্য করুন: