দেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পুরোপুরি সংস্কার হয়নি: শিবির সভাপতি
ইসলামী ছাত্র শিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আমাদের বড় যে দুটি দাবি ছিল তা হলো, জুলাই গণহত্যার বিচার ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার। সেই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পুরোপুরি সংস্কার হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। তবে আশা করছি সংস্কার হবে এবং নির্বাচনের জন্য আরও ভালো পরিবেশ প্রয়োজন বলে মনে করছি।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর কারমাইকেল কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্র শিবিরের উদ্যোগে অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ ও ডিপার্টমেন্ট প্লেসধারী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাত্র শিবির চায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে শিবির সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে দেখা যায় যারাই ক্ষমতায় গিয়েছে তারাই ফ্যাসিবাদী কায়েম করেছে বা সর্বোচ্চ ফ্যাসিস্ট হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সে হিসেবে মনে করি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি হওয়া উচিত। কারণ আইন ভিত্তি না হলে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকবে। যেহেতু জুলাই সনদ নিয়ে সংস্কার কমিশন, ঐক্যমত কমিশনের অনেক লম্বা সময় ধরে আলোচনা হয়েছে সেগুলো যেন বিফলে না যায়।
ছাত্র শিবিরের ক্যাম্পাস ভিত্তিক কোনো কর্মসূচি হলে একটি নির্দিষ্ট দলের ছাত্ররা ৭১কে টেনে আনে, তাদের এই প্রবণতাকে আপনি কিভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ১৯৭১ এ আমাদের মানুষ রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে। ৭১ পরবর্তী সকলের প্রত্যাশা ছিলো পাকিস্তান আমাদের সাথে যে বৈষম্য করেছিলো তা থেকে পরিত্রাণ হবে এবং বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হবে। কিন্তু আমরা দেখেছি পাকিস্তানকে সরিয়ে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছিলো তারা পাকিস্তানের চেয়েও বেশি স্বৈরাচার হয়ে উঠেছিল। আওয়ামী লীগ ৭১কে নিজেদের ব্যবসায়িক ইন্ডাষ্ট্রিতে পরিণত করেছিল। তবে ২৪’র গণ অভ্যুত্থানের পর আর কেউ স্বৈরাচার হয়ে উঠবে না বলে আমার বিশ্বাস।
আগামী নির্বাচনে ছাত্র শিবির প্রশাসনকে সহযোগিতা করবে কি না, প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রশাসন যদি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের কাছে সহযোগিতা চায় তবে অবশ্যই শিবির তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী প্রশাসনকে সহযোগিতা করবে।
তিনি বলেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে সবচেয়ে জোড়ালো আওয়াজ তুলেছিল ছাত্র শিবির। সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও দাবি ছিল যেহেতু বিগত সময়ে ফ্যাসিবাদী রাজনীতি কায়েম ছিল সেজন্য সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি কেমন ছিল তা চর্চা করা। সেই দাবির প্রেক্ষিতে আমার বাংলাদেশের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেখলাম। সেই সাথে আমরা জানতে পেরেছি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যাল, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রশাসন প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তবে আমরা প্রত্যাশা করছি প্রশাসন দ্রুতই নির্বাচনের তারিখ ও ইস্তেহার ঘোষণা করবে। সেই সাথে ধাপে দাপে বাংলাদেশের প্রতিটি ক্যাম্পাসেই ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিতহবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।
কারমাইকেল ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য মাহবুবার রহমান বেলাল, রংপুর মহানগর ছাত্র শিবিরের সভাপতি নুরুল হুদাসহ অন্যরা।
বিভি/এসজি




মন্তব্য করুন: