• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

আবার আলোচনায় প্রিন্স মুসার ছেলে ববি হাজ্জাজের ‘এনডিএম’

প্রকাশিত: ১৪:২৫, ১৭ জুলাই ২০২২

আপডেট: ১২:৫১, ১২ আগস্ট ২০২২

ফন্ট সাইজ
আবার আলোচনায় প্রিন্স মুসার ছেলে ববি হাজ্জাজের ‘এনডিএম’

ববি হাজ্জাজ ও প্রিন্স মুসা বিন শমসের

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে নির্বাচন ক‌মিশন। রবিবার (১৭ জুলাই) সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে ব‌বি হাজ্জাজের নেতৃত্বাধীন দল জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এন‌ডিএম) সঙ্গে সংলাপ শুরু করে সংস্থাটি।

এই দফার সংলাপ এন‌ডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বে আরও ৯ জন প্রতিনিধি দলের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হা‌বিবুল আউয়াল এতে সভাপতিত্ব করেন। আজ এন‌ডিএম ছাড়া আরও তিন দলের সঙ্গে সংলাপের সময় নির্ধারণ করে ইসি।

আরও পড়ুন: এসআই টুটুলের নতুন স্ত্রীকে নিয়ে যা বললেন তানিয়া

গত কয়েক বছর ধরে রাজনীতির মাঠে কর্মসূচি না থাকলেও নির্বাচনের আগে তৎপর হয়ে উঠে ববি হাজ্জাজ। তাই তাঁকে নিয়ে আবারও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। নির্বাচনের আগে কেন তার এমন তৎপরতা থাকে সেসব উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছেন অনেকে। 

ববি হাজ্জাজ ২০১৩ সালে জাতীয় পার্টির রিসার্চ অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি উইং এ সম্পৃক্ত হওয়ার মাধ্যমে রাজনীতিতে আসেন। এর আগে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুদিন শিক্ষকতা করেন তিনি। আলোচনায় আসেন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগ মুহূর্তে। তখন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের রাজনৈতিক উপদেষ্টা হয়ে থাকেন রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। যদিও জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রে এ ধরনের কোনো পদ নেই। দশম জাতীয় নির্বাচনের আগে এরশাদ ‘রহস্যময়’ অসুস্থতা নিয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি হলে ববি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের মুখপাত্র হিসেবে আবির্ভূত হন। কয়েক দিনের মাথায় চলে যান যুক্তরাজ্যে। সেখানে বসে গণমাধ্যমে অভিযোগ করেন, নির্বাচনে অংশ নিতে চান না বলে এরশাদকে সরকার জোর করে সিএমএইচে ভর্তি করে রেখেছে। অভিযোগ করেন তাকে জোর করে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তার এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দেয়।

আরও পড়ুন: বিশ্বজুড়ে আলোচনায় থাকা বিদ্যুতের আবিষ্কারক কে?

২০১৫ সালে ঢাকা সিটির নির্বাচনের সময় জাতীয় পার্টি প্রার্থী ঠিক করার পর তার বিপরীতে মেয়র পদে প্রার্থিতা ঘোষণা করায় ববি হাজ্জাজকে বিশেষ উপদেষ্টার দায়িত্ব থেকে বাদ দেন এইচ এম এরশাদ। জাতীয় পার্টির সঙ্গে চূড়ান্তভাবে সম্পর্ক ছেদ করেন। এরপর একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২০১৭ সালের এপ্রিলে ববি হাজ্জাজ নতুন দল ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (এনডিএম) গঠনের ঘোষণা দেন। কিন্তু দলের নিবন্ধন না থাকায় ঢাকা-৬ আসন থেকে তিনি নির্বাচনে অংশ নেন বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মনোনয়নে ‘হারিকেন’ প্রতীক নিয়ে। এতে ৭৫০ ভোট পেয়েছিলেন। ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি এনডিএমকে নিবন্ধন দিয়ে নির্বাচন কমিশন প্রজ্ঞাপন জারি করে। ‘সিংহ’ প্রতীক পাওয়া এনডিএম এর নিবন্ধন নম্বর ০৪৩। সে হিসেবে নির্বাচন কমিশন তাদের সংলাপে চিঠি দেয় দলটিকে।

আলোচিত ধনকুবের মুসা বিন শমসের। অস্ত্র ও তেল কেনাবেচায় মধ্যস্থতার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদের অধিকারী হওয়ায় তার নামের সঙ্গে যুক্ত হয় ‘প্রিন্স’ উপাধি। যার ৫১ হাজার কোটি টাকা আটকে রয়েছে সুইস ব্যাংকে। যিনি চলেন চৌকস দেহরক্ষী নিয়ে। জীবনযাত্রার প্রতিটি পদে যার রয়েছে বিলাসিতার ছোঁয়া। সেই মুসার বড় ছেলে এই ববি হাজ্জাজ।

২০১৫ সালে উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় তিনি জানিয়েছিলেন, পেশা শিক্ষকতা। সেখান থেকে তিনি মাসে উপার্জন করেন গড়ে ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা। এ ছাড়া শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে প্রতি মাসে আরও আয় করেন প্রায় ১৭ হাজার ৭৯৮ টাকা। সব মিলিয়ে মাসে তার আয় প্রায় ৫২ হাজার টাকা। হলফনামায় দেওয়া তথ্যমতে, কোথাও কোনো স্থাবর সম্পদ নেই। কৃষি বা অকৃষি জমি, বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট নেই তার। 

আরও পড়ুন: মসজিদেরটা পরে, আগে নেতাদের বাসার এসি বন্ধ রাখুন: তাসমিয়া

স্ত্রীর আছে ১০০ ভরি সোনা 

ববি হাজ্জাজের ওপর নির্ভরশীল হিসেবে দেখানো হয়েছে কেবল তার স্ত্রীকে। হলফনামায় দেওয়া তথ্যানুযায়ী, তার স্ত্রীর কোনো আয়ের উৎস নেই। তবে অস্থাবর সম্পদ হিসেবে তার কাছে নগদ রয়েছে ৪৫ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ববি হাজ্জাজের চাইতেও বেশি অর্থ, যার পরিমাণ দুই লাখ চার হাজার ১০২ টাকা। আর রয়েছে ১০০ ভরি স্বর্ণ। ববি হাজ্জাজের স্ত্রীর একমাত্র স্থাবর সম্পদ হিসেবে দেখানো হয়েছে একটি ফ্ল্যাট।

ধনকুবের মুসা বিন শমসেরের রয়েছে ড্যাটকো নামে একটি জনশক্তি রফতানির প্রতিষ্ঠান। স্বাধীনতার পর তিনিই প্রথম এই ব্যবসা শুরু করেন। এ ছাড়া অস্ত্র ব্যবসা ও তেল কেনাবেচার মধ্যস্থতাও করেন। বিশ্বের সবচেয়ে দামি ঘড়িগুলোর একটি ব্যবহার করেন, রয়েছে স্বর্ণখচিত ফোন, ৫০০ হীরা খচিত কলম দিয়ে লেখালেখি করা, দেহরক্ষী নিয়ে চলাচলসহ বিলাসী জীবনযাপনের জন্য বারবারই আলোচনায় এসেছেন তিনি। ১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে লেবার পার্টিকে অনুদান দিতেও চেয়েছিলেন তিনি। 

সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে সাত বিলিয়ন ডলার (প্রায় ৫১ হাজার কোটি টাকা) আটকে থাকা নিয়ে ব্যাপক আলোচিত হন মুসা। ১০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) গিয়ে এসব অর্থ উদ্ধারে সংশ্লিষ্টদের সহায়তা চান। একই দিন তিনি এসব অর্থ উদ্ধার করা হলে বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, মুক্তিযোদ্ধা ও মানুষের কল্যাণ ও পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয় করার কথাও বলেছিলেন প্রিন্স মুসা।

বিভি/এনএম

মন্তব্য করুন: