নগর ভবন ও আঞ্চলিক কার্যালয়ে তালা, বন্ধ ডিএসসিসির সব সেবা

নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় এবং নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়িয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের পদে বসানোর দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভের পাশাপাশি নগর ভবনের সব ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে তার সমর্থকরা। এতে বন্ধ হয়ে গেছে সিটি করপোরেশনের সকল কার্যক্রম।
শনিবার (১৭ মে) সকাল ৯টার দিকে নগর ভবনে প্রবেশের সব ফটকে অন্তত ৬৫টি তালা ঝুলিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। এতে শুধু সিটি করপোরেশন নয়, ওই ভবনে থাকা স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার কার্যালয়েরও কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। নগর ভবনের কার্যালয়ে অফিস করতে পারছেন না আসিফও।
এদিকে ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে ঢাকাবাসীর এই বিক্ষোভের অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয়েও তালা দিয়েছেন তার সমর্থকরা। তারা সেখানে কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে প্রবেশ করতেও দেননি। এতে সিটি করপোরেশনের সকল সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ভোগান্তির মুখে পড়েছেন সোবাপ্রার্থীরা। অপরদিকে স্ব স্ব কার্যালয়ে প্রবেশ করতে না পেরে কার্যত অঘোষিত ছুটি কাটাচ্ছেন করপোরেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ইশরাক হোসেনকে মেয়র পদে না বসানোর প্রতিবাদে ‘ঢাকাবাসী’র ব্যানারে তৃতীয় দিনের মতো সকাল ৯টা থেকে নগর ভবনের সামনে জড়ো হন ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা। বেলা ১১টার পর্যন্ত নগর ভবনের সামনে থেকে সচিবালয়ের দিকে মিছিল নিয়ে যান তারা। বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে ইশরাক হোসেনের সমর্থকেরা স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও তাঁর সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদীকে নগর ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। পাশাপাশি তাঁদের যেখানে পাওয়া যাবে, সেখানে প্রতিহত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।
বেলা দেড়টার দিকে নগর ভবনের সামনে আগামীকালের কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে দিনের কর্মসূচি শেষ করেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সচিব মশিউর রহমান বলেন, আগামীকাল রোববারও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে ‘ঢাকাবাসী’।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল। ঈদের পর ১৬ এপ্রিল পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে ১০ দিনে মধ্যে গেজেট প্রকাশের জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন আদালত। ২২ এপ্রিল ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশ করা নিয়ে আইনগত কোন জটিলতা আছে কিনা সেই মতামত চেয়ে আইন মন্ত্রনালয়ে চিঠি পাঠায় নির্বাচন কমিশন। তবে আইন মন্ত্রনালয়ের মতামতের অপেক্ষায় থেকে নির্ধারিত ১০ দিনের ঠিক শেষ দিন ২৭ এপ্রিল রাত ৯টায় আইন মন্ত্রনালয়ের মৌখিক অনুমতি নিয়ে গেজেট প্রকাশ করে ইসি। পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য ২৮ এপ্রিল সেই গেজেট স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের পাঠায় ইসি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় থেকে আবারো আপিলের জন্য পাঠানো হয় নির্বাচন কমিশনে। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন আপিল করবে না জানিয়ে দেন। তারও প্রায় এক সপ্তাহ পেড়িয়ে গেলেও শপথের ব্যবস্থা করছেন না স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়।
বিভি/কেএস/এজেড
মন্তব্য করুন: