পাহাড়ে আতঙ্কের নাম ইউপিডিএফ

সম্প্রতি পার্বত্যাঞ্চলে নানান বিশৃঙ্খলা ঘটিয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করছে ইউপিডিএফ। গত ১ মে বিকালে বাঘাইছড়ি উপজেলা থেকে দীঘিনালা ১১ কিলো জুম্মবি আদম এলাকায় রোডে একটি জিপগাড়ি থেকে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে গাড়িটি ভাঙচুর করা হয়েছে।
রাঙ্গামাটি সদর থেকে মারিশ্যা গামী (চট্টমেট্রো-ন ১১৯০৭৮) নম্বরের জীপ গাড়ি ইউপিডিএফ এর প্রধান কালেক্টর সুবেল চাকমা ও সোহেল চাকমার নেতৃত্বে গাড়ি আটক করে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে চাবি নিয়ে নেয়। পরে সবগুলো চাকার হাওয়া ছেড়ে দেয় এবং গাড়ীটি ভাংচুর করে ও আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে।
ওই গাড়ী ড্রাইভারের নাম মো. জিন্নাত আলী। বাঘাইছড়ির ২ নং ওয়ার্ড পৌরসভার পশ্চিম মুসলিম ব্লকের মাইনউদ্দিনের ছেলে। আহত অবস্থায় তিনি বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
একই দিন রাত ১১টায় খাগড়াছড়ি জীপ সমিতির গাড়ি আটকের পর ৬ ইবি বাঘাইহাট জোনের স্কর্টে জীপ গাড়ীটি উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার কারণে পুনরায় গাড়িটি আটক করে ভাংচুর করে।
এছাড়া রেজাউল করিম সুমন নামক ফেসবুক ব্যবহারকারী এক ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। যিনি টুর অপারেটর/প্লানার/গাইড হিসেবে কর্মরত। সুমন ট্যুরিসমের কর্ণধার তিনি। যেখান থেকে বাঙালি-পাহাড়ি সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
তার বিরুদ্ধে সাম্প্রতিককালে ইউপিডিএফ (প্রসীত) ও জেএসএস (সন্ত) এর প্ররোচনায় আদিবাসী ইস্যুকে পুঁজি করে উপজাতিদের কৃষ্টি কালচার এর কন্টেন্ট তৈরি করার আড়ালে বিভিন্ন দেশি/ বিদেশি গোষ্ঠী/সংস্থাসমূহের সাথে যোগশাজসের মাধ্যমে অত্যন্ত সুকৌশলে আদিবাসী ইস্যুটির স্বপক্ষে তৎপরতা চালানোর অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলসমূহ এবং এক শ্রেণীর স্বার্থান্বেষী ও বুদ্ধিজীবী মহলের স্বার্থ উদ্ধারের তৎপরতার লক্ষ্য করা গেছে।
এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কঠোর সমালোচনা করে উপজাতিদের পক্ষাবলম্বন করার অভিযোগ রয়েছে। সেই সঙ্গে পাহাড়ি ও বাঙালি সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন ইস্যুতে একপেশেভাবে উপজাতিদের পক্ষাবলম্বন করে বাঙালিদের সেটেলার হিসেবে সম্বোধন ও পাহাড়ি- বাঙালি সম্প্রীতি নষ্ট করার পায়তারা করছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তার স্থায়ী ঠিকানা রংপুর জেলা হলেও বছরের বেশিরভাগ সময়ে তিনি ৩ পার্বত্য জেলা ও ভারতের সেভেন সিস্টার্স এলাকায় ভ্রমন করে থাকেন বলে জানা যায়।
এদিকে সাজেক পর্যটন এলাকায় ইউপিডিএল পরিবহনকৃত পানির গাড়ীর বন্ধ করে দিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। গত ১ মে রাঙ্গামাটি জেলা বাঘাইছড়ি উপজেলা সাজেক ইউনিয়নের ইউপিডিএফ প্রসীত কর্তৃক পানি গাড়ি নিষেধাজ্ঞা ফলে শিজকছড়া হতে সাজেক পর্যটন এলাকায় পরিবহনকৃত পানির গাড়ীর বন্ধ রয়েছে।
ইউপিডিএফ মূল গ্রুপের চাঁদা সংগ্রাহক বিদ্যুৎ চাকমাকে শুকনাছড়া হতে আটক করে আদালতে পাঠানোয় সাজেক পর্যটন এলাকায় ইউপিডিএফের সদস্যরা পানির গাড়ী আসতে বাধা প্রদান করছে বলে জানা যায়।
এছাড়া ৬ ইবি বাঘাইহাট জোনের আওতাধীন গঙ্গারাম বাজার হতে কোন মালামালের গাড়ী সাজেক এবং উদয়পুর এলাকায় যেতে বাধা দিচ্ছে। উল্লেখ্য সাজেকের অনেক রিসোর্ট ও কটেজে পর্যটক রয়েছে। পানির গাড়ি বন্ধ থাকলে সাজেক ভ্যালিতে পানির সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন: