বিষয়ভিত্তিক বৈষম্যের অবসান চান আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলেছেন, আমরা যারা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (International Relations) বিষয়ে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের অধীনে পড়াশোনা করেছি, তাদের জন্য একটি বিস্ময়কর ও হতাশাজনক বিষয় হলো- এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি এনটিআরসিএ-এর কোনো শিক্ষাপদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নয় এবং শিক্ষা ক্যাডারেও এটি স্বীকৃতি পায় না।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, যেখানে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে বিসিএস-এর মাধ্যমে সরকারি স্কুলে শিক্ষকতার সুযোগ রয়েছে, সেখানে কেন আমরা অন্যান্য শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট সরকারি বা বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে আবেদন করতে পারি না? একই অনুষদ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, সমাজকর্ম প্রভৃতি বিষয়ে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পদে আবেদন করতে পারলেও আমরা কেন বঞ্চিত?
এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৬৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মাসরুর বলেন, এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্য এবং আমাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার অবমূল্যায়ন। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক শুধু একটি বিষয় নয়- এটি আধুনিক বিশ্বে ও নিজ দেশের রাষ্ট্রচিন্তা, কূটনীতি, নিরাপত্তা এবং উন্নয়ন বোঝার অন্যতম ভিত্তি। আমাদের দেশের স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের পাঠ্যক্রমে বিশ্বপরিচিতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি, ভূ-রাজনীতি ইত্যাদি বিষয় যুগ যুগ ধরে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অথচ, এসব বিষয়ে আমরা অধিকতর দক্ষ ও যোগ্য হয়েও পাঠদান এবং গবেষণার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এই অবহেলা রাষ্ট্রের জন্য দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর হতে পারে। অন্যদিকে, আমাদের দেশের সার্বিক বাস্তবতার কথা বিবেচনা করেও বলা যায়, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ছাত্র ছাত্রীরা ন্যূনতম শিক্ষকতা করার সুযোগ পেলে অনার্স, মাস্টার্স পাস করার পর হতাশায় থাকা বহু শিক্ষার্থী নিজেদেরকে প্রাথমিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করে আশার আলো দেখতে পারবেন।
তাই, আমরা নিম্নলিখিত দাবিগুলোর বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করি:
১. আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়টিকে NTRCA-এর স্বীকৃত বিষয়ের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে শিক্ষকতা পেশায় সুযোগ প্রদান সময়ের দাবি।
২. শিক্ষা ক্যাডার এবং পররাষ্ট্র ক্যাডারে এই বিষয়ে আলাদা পদ সৃষ্টি কিংবা সমজাতীয় বিষয়ে আবেদন করার সুযোগ থাকা উচিত।
৩. সরকারি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে ডিগ্রিধারীদের নিয়োগের পথ সুগম করা উচিত।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, আমাদের বিভাগের শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার স্যারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। পাশাপাশি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, NTRCA ও বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (PSC) দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের বর্তমান ও সাবেক ছাত্র-ছাত্রী ভাইবোন এবং সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দের সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করছি।
বিভি/পিএইচ
মন্তব্য করুন: