সিরিয়ায় ‘নতুন যুগের শুরু’ বলে ঘোষণা বিদ্রোহীদের, ইরানের জন্য বড় ধাক্কা
								ছবি: সংগৃহিত
সিরিয়ায় ‘নতুন যুগের শুরু’ বলে ঘোষণা করেছে বিদ্রোহীরা। আসাদ সরকারের পতনের সাথে এবার মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। গত কয়েক বছরে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে। বিশেষ করে ইরাক, সিরিয়া এবং লেবাননে।
সিরিয়ায় আসাদ সরকারকে এতদিন সমর্থন দিয়ে শিয়া ইসলামিক প্রভাব বজায় রেখে আসছিল ইরান। এ অঞ্চলে ইরানের বেশ কিছু ঘনিষ্ঠ মিত্র রয়েছে, বিশেষ করে লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং ইরাকি শিয়া মিলিশিয়াগুলো। এই মিত্রদের দ্বারা ইরান নিজের আধিপত্য বাড়িয়েছে। পাশাপাশি, প্যালেস্টাইনকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন দিয়ে গেছে।
অন্যদিকে, সৌদি আরব এবং এর সহযোগী দেশগুলো, যারা নিজেদের আধুনিকীকরণ এবং পশ্চিমা বিশ্বে আস্থা স্থাপন করতে ব্যস্ত, তারা এই পরিস্থিতি থেকে সুবিধা নিতে পারে। সিরিয়ার রাজনৈতিক অবস্থান শুধুমাত্র মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক সমীকরণকে পাল্টে দেবে না, বরং ইরানের দীর্ঘমেয়াদী কৌশলকেও নাড়িয়ে দেবে।
এই পরিবর্তনের কারণে লেবাননও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ইসরাইলের বিমান হামলার পর, হিজবুল্লাহ ব্যাপকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। ফলে, তাদের পুনরায় সংগঠিত হওয়া কঠিন হয়ে উঠছে। দেশটি চাইছে, হিজবুল্লাহ যাতে আবার অস্ত্রসজ্জিত না হয়। সম্প্রতি, ইসরাইল শুধু লেবাননে নয়, সিরিয়াতেও তীব্র বিমান হামলা চালিয়েছে, কারণ ইসরাইল চায় না, ইরান সেখানে স্থায়ীভাবে সামরিক অবস্থান গড়ে তুলুক।
বাশার আল-আসাদের পতনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রয়েছে ‘হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)’-এর, যার বর্তমান নেতা ‘আবু মোহাম্মদ আল-জুলানি’। আল-জুলানি ১৯৮২ সালে সৌদি আরবের রিয়াদে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি তার পরিবারসহ দামেস্কে চলে আসেন।
২০০৩ সালে আল-জুলানি ইরাকে আল-কায়েদায় যোগ দেন এবং সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ২০০৬ সালে মার্কিন সেনারা তাকে আটক করে এবং ৫ বছর বন্দি রাখে। মুক্তি পাওয়ার পর আল-জুলানি সিরিয়ায় আল-কায়েদার শাখা ‘আল-নুসরা ফ্রন্ট’ প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব পান। এই গোষ্ঠীটি সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলো, বিশেষ করে ইদলিবে, প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে।
শুরুর দিকে, আল-জুলানি আইএসআইএসের নেতা ‘আল-বাগদাদি’র’ সাথে সমন্বয় করেছিলেন। ২০১৩ সালে আল-বাগদাদি আল-কায়েদার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিলেও, আল-জুলানি রয়ে যান। ২০১৬ সালে আলেপ্পোতে সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে জয়লাভের পর আল-জুলানি তার সংগঠনের নাম পরিবর্তন করে ‘জাবহাত ফাতেহ আল-শাম’ রাখেন। ২০১৭ সালে আল-জুলানি আরও কয়েকটি সংগঠনের সাথে মিলে ‘হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)’ গঠন করেন। এইচটিএস-এর প্রধান লক্ষ্য সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন ঘটানো, ইসলামিক আইন অনুযায়ী একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা এবং দেশ থেকে ইরানি মিলিশিয়া বাহিনীগুলো উৎখাত করা।
বিভি/আইজে
						


							
							
 
										
							
							
							
							
							
							
							
							
							
							
											
											
											
											
মন্তব্য করুন: