পদত্যাগ করলেন ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রী, অস্থিরতার নতুন মোড় (ভিডিও)
শনিবার সকাল থেকেই ইসরাইলের আকাশে একের পর এক মিসাইল ছুটে আসে ইয়েমেন থেকে। বিশেষ করে হাইপারসোনিক ব্যালিস্টিক মিসাইলের আঘাতে রামাত ডেভিসের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। জ্বলন্ত আগুন ছড়িয়ে পড়ে ঘাঁটির বিভিন্ন স্থানে। ইসরাইলি গণমাধ্যম বলছে, গত এক মাসে প্রায় ৩০টির মতো মিসাইল ইসরাইলে আঘাত হেনেছে। এমন অবস্থায় ইসরাইলের প্রায় প্রতিটি শহরই এখন ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আতঙ্কে রয়েছে।
এই সামরিক অভিযানে ‘প্যালেস্টাইন-২’ নামের একটি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। হুথি-নিয়ন্ত্রিত সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি শনিবার এক বিবৃতিতে জানান, গাজায় নিপীড়িত জনগণের প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে এ হামলা চালানো হয়েছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যতক্ষণ গাজায় আগ্রাসন বন্ধ না হবে এবং অবরোধ না তুলে নেওয়া হবে, ততক্ষণ ইয়েমেনি বাহিনীর হামলা অব্যাহত থাকবে।”
এদিকে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ইয়েমেনে হুথি-বিরোধী জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আওয়াদ বিন মুবারক পদত্যাগ করেছেন। রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, সরকারি সংস্থাগুলোর সংস্কারে ব্যর্থতা এবং জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের মুখে শনিবার তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এটি দেশটির চলমান সংকটকে আরও জটিল করে তুলেছে।
পদত্যাগের ঘোষণায় মুবারক উল্লেখ করেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে এবং মন্ত্রিসভার প্রয়োজনীয় পুনর্গঠন করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এছাড়া তিনি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং কাঠামোগত সমস্যার কথাও উল্লেখ করেন, যা তার দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করেছে। দেশটিতে এই পদত্যাগ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ সরকারের ব্যর্থতার প্রতীক হিসেবে এটিকে দেখছেন, আবার কেউ কেউ নতুন নেতৃত্বের আশা প্রকাশ করেছেন।
ইয়েমেন ২০১৪ সাল থেকে গৃহযুদ্ধে নিমজ্জিত। মুদ্রাস্ফীতি, দুর্নীতি এবং সরকারি সেবার অভাবের কারণে সাধারণ ইয়েমেনিরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। সম্প্রতি অর্থনৈতিক সংকটের প্রতিবাদে রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন ইয়েমেনিরা। দেশটির জনগণ সরকারের কাছে জবাবদিহিতা এবং উন্নত জীবনযাত্রার দাবি জানিয়েছে। ফলে এমন অস্থির সময়ে বিন মুবারকের এই পদত্যাগ হুথি-বিরোধী জোটের ভঙ্গুরতাকে আরও প্রকাশ্যে এনেছে।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: