• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

রোহিঙ্গা বৃদ্ধ, নারী-কিশোর ও ক্যান্সার রোগীকে সাগরে ফেলে দিলো ভারত, জাতিসংঘের তদন্ত শুরু

প্রকাশিত: ১৩:২৯, ১৭ মে ২০২৫

আপডেট: ১৩:২৯, ১৭ মে ২০২৫

ফন্ট সাইজ
রোহিঙ্গা বৃদ্ধ, নারী-কিশোর ও ক্যান্সার রোগীকে সাগরে ফেলে দিলো ভারত, জাতিসংঘের তদন্ত শুরু

ছবি: সংগৃহীত

এবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের আরও এক মারাত্মক ঘটনা ঘটিয়েছে ভারত। দেশটি যেনো ধীরে ধীরে আরও নির্মম আচরণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি নারী ও কিশোরসহ অন্তত ৪০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আন্দামান সাগরে ফেলে দিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দফতর ১৫ মে এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানায়।

এই ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। ভারতের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নতুন করে। এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও শরণার্থী আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। জাতিসংঘের একজন মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ এই ঘটনাকে অসহনীয় ও অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি একই সঙ্গে ভারত সরকারকে এমন অমানবিক ও প্রাণঘাতী আচরণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।

রোহিঙ্গারা বিশ্বের অন্যতম সবচেয়ে নিপীড়িত জাতিগোষ্ঠী। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর গণহত্যার সময় প্রায় ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তবে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলেও প্রায় ২২,০০০ রোহিঙ্গা জাতিসংঘের শরণার্থী স্বীকৃতি নিয়ে বসবাস করছে।

রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে মনে করে থাকে ভারত সরকার। তাদেরকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবেও গণ্য করে বিজেপি। এদিকে, ভারতে শরণার্থীদের জন্য কোনও নির্দিষ্ট আইনি কাঠামো নেই। দেশটি ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনের স্বাক্ষরকারী দেশও নয়। ফলে রোহিঙ্গাদের জন্য ভারতে কোনও সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই। সম্প্রতি বিজেপি নেতা হেমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, একটি নতুন পদ্ধতির মাধ্যমে আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো হবে। সেসময় এটিকে তিনি নতুন উদ্ভাবন বলেও আখ্যা দেন।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তথ্যমতে, ৬ মে রোহিঙ্গাদের একটি গ্রুপকে গ্রেফতার করে তাদের চোখ বেঁধে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নৌবাহিনীর একটি জাহাজে উঠিয়ে মিয়ানমারের তানিনথারাই অঞ্চলের দিকে নেওয়া যাওয়া হয় রোহিঙ্গাদের। জাহাজটি যখন গন্তব্যে পৌঁছায় তখন তাদের লাইফ জ্যাকেট পরিয়ে সমুদ্রে লাফিয়ে পড়তে বাধ্য করা হয় ও উপকূলের দিকে সাঁতরে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ (পিইউসিএল) জানিয়েছে, যাদের সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হয়েছিলো, তাদের মধ্যে কিশোর, বৃদ্ধ ও একজন ক্যান্সার রোগীও ছিলেন। তবে তারা সবাই কোনো উপায়ে তীরে পৌঁছাতে পেরেছিলেন।

জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি টম অ্যান্ড্রুজ বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে সাগরে ফেলে দেওয়ার চিন্তাটাই অত্যন্ত ভয়াবহ। তিনি এই বিষয়ে ভারতের কাছ থেকে যথাযথ ব্যাখ্যা চান।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা শরণার্থী অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানান, তার পরিবারকে মিয়ানমারের একটি দ্বীপে জোরপূর্বক পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত তিনি তাদের সম্পর্কে কিছুই জানেন না।

এটি শুধু একটি দুটি ঘটনা নয়। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তেও অভিবাসীদের সাথে অমানবিক আচরণ করেছে দিল্লি। মে মাসেই বাংলাদেশের কোস্টগার্ড সুন্দরবনের কাছে ৭৮ জন বিধ্বস্ত অভিবাসীকে উদ্ধার করে। তারা জানায়, গুজরাট থেকে তাদের ধরে এনে বিমানযোগে সীমান্ত এলাকায় পাঠানো হয়। পরে একটি লঞ্চে করে মংলার মন্দারবারিয়া সৈকতের কাছে নামিয়ে দেওয়া হয়। উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের হাত ভাঙা ছিলো। অনেকের শরীরেই নির্যাতনের চিহ্ন ছিলো।

এদিকে, আসাম রাজ্যে আটক হয় প্রায় ১০০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী। এদের মধ্য থেকে অনেককে বাংলাদেশ সীমান্তে এনে পুশ ইন করা হয় বলে জানায় কাতার ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। ভারতের এই নিষ্ঠুর পরিকল্পনা এই অঞ্চলের মানবাধিকার ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।

বিভি/আইজে

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2