নতুন শঙ্কট, ডেপুটি স্পিকারের আদেশে স্পিকারের স্বাক্ষর নিয়ে বিতর্ক

পাকিস্তানের সংসদে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের ইস্যু নতুন মোড় নিয়েছে। দেশটির সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলাকালে দেখা গেলো ডেপুটি স্পিকারের খারিজ করে দেওয়া আদেশে স্বাক্ষর করেছেন স্পিকার।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব অসাংবিধানিক দাবি করে খারিজ করে দেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি। কিন্তু আজ (বৃহস্পতিবার) আদালতে শুনানি চলাকালে দেখা গেলো সুপ্রিম কোর্টকে দেওয়া আদেশের কপিতে স্বাক্ষর করেছেন স্পিকার আসাদ কায়সার।
এদিন প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের একটি বৃহত্তর বেঞ্চে মামলাটির শুনানি চলছিল। এ সময় বিষয়টি নজরে আনেন বিচারপতি জামাল খান মান্দোখেল। শুনানিতে অপর তিন বিচারপতি ইজাজুল আহসান, বিচারপতি মাজহার আলম ও বিচারপতি মুনিব আখতার উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
এ সময় বিচারপতি মান্দোখেল বলেন, আদেশ দিয়েছিলেন ডেপুটি স্পিকার কিন্তু আদেশে স্বাক্ষর রয়েছে স্পিকারের। তিনি জানতে চান, ডেপুটি স্পিকারের স্বাক্ষর কোথায়? এই বিচারপতি আরও বলেন, সংসদীয় কমিটির কার্যবিবরণীতে প্রমাণিত হয় না যে ডেপুটি স্পিকার ওই ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।
জবাবে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের আইনজীবী নাইম বুখারি বলেন, বিচারপতির কাছে থাকা আদেশের নথি সম্ভবত ‘আসল’ নয়। তিনি উল্টো বলেন, অতীতে সংসদীয় কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত ছিলেন সর্বোচ্চ আদালত।
স্পিকার যদি ফাওয়াদ চৌধুরীর পয়েন্ট অব অর্ডার খারিজ করে দিতেন, তাহলে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত নোটিশ গ্রহণ করে শুনানি করতেন কি না সেটিও জানতে চান বুখারি।
বুখারি বলেন, অতীতে যখন জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছিল, তখন তা অসাংবিধানিক ঘোষণা করার পরও নির্বাচনী প্রক্রিয়া বন্ধ করা হয়নি। পয়েন্ট অব অর্ডার আমলে নিয়ে স্পিকার অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দিতে পারেন।
এ সময় বিচারপতি মান্দোখেল বলেন, অনাস্থা প্রস্তাবে ভোট দেওয়া সাংবিধানিক চাওয়া। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, রুলিং দিয়ে ভোট দেওয়ার সাংবিধানিক অধিকার অবৈধ ঘোষণা করা যায় কি না।
প্রধান বিচারপতি বলেন, বিরোধীদের কি পয়েন্ট অব অর্ডারের জবাব দেওয়ার সুযোগ প্রদান করা উচিত ছিল না। জবাবে আইনজীবী বলেন, এ নিয়ে বিতর্ক হতে পারে না।
বুখারি জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যবিবরণীও পেশ করেন, যেখানে পার্লামেন্ট সদস্যদের ‘হুমকির চিঠির’ বিষয়বস্তু জানানো হয়েছিল। কমিটিকে দেওয়া ব্রিফিংয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতীয় পরিষদের কমিটিকে জানানো হয়েছে—যদি অনাস্থা প্রস্তাব ব্যর্থ হয়, তাহলে পরিণতি ভোগ করতে হবে।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা বিরোধী দলগুলোর অনাস্থা প্রস্তাব ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার। এরপরই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট। অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের দিনই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে শুনানি গ্রহণ করেন সুপ্রিম কোর্ট।
বিভি/কেএস
মন্তব্য করুন: