• NEWS PORTAL

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

বাংলাদেশের পাখি

হাসিনুর রেজা চঞ্চল

প্রকাশিত: ১৮:২৪, ২০ জুলাই ২০২২

আপডেট: ১৯:০৮, ২০ জুলাই ২০২২

ফন্ট সাইজ
বাংলাদেশের পাখি

চির সবুজ বাংলার গাছে গাছে নানা রঙের নানা জাতের পাখির বসতি। তার মধ্য থেকে কিছু পাখির ছবি বাংলাভিশনের পাঠকের জন্য তুলে ধরেছেন হাসিন রেজা:

১. নীলগলা বসন্ত বাউরি:

নীলগলা বসন্ত বাউরি বা বড় বসন্ত বাওরি বা ধনিয়া পাখি মেগালাইমিডি (Megalaimidae) পরিবার বা গোত্রের অন্তর্গত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এক প্রজাতির ফলাহারী পাখি।

নীলগলা বসন্ত বাউরি

২. বাংলা কাঠঠোকরা:

বাংলা কাঠঠোকরা (বৈজ্ঞানিক নাম: Dinopium benghalense) Picidae (পিসিডি) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Dinopium (ডাইনোপিয়াম) গণের অন্তর্ভুক্ত এক প্রজাতির অতি পরিচিত পাখি । পাখিটি বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দেখা যায়।

বাংলা কাঠঠোকরা

৩. ঈগল:

ঈগল একপ্রকার বৃহৎ আকার, শক্তিধর, দক্ষ শিকারি পাখি। ঈগল সাধারণত বনে বা ঘন জঙ্গলে বসবাস করে থাকে। বানর, ছোট জাতের পাখি, টিকটিকি, হাস-মুরগী খেয়ে জীবনধারণ করে থাকে। একটি পূর্ণবয়স্ক ঈগলের ওজন প্রায় ৩০ কেজি এবং লম্বায় প্রায় ৩০-৩৫ ইঞ্চি হয়ে থাকে।

ঈগল

৪. ইউরেশিয় সবুজ কাঠঠোকরা

ইউরেশিয় সবুজ কাঠঠোকরা

৫. স্ত্রী কোকিল:
পেটে ডিম আছে এমন স্ত্রী কোকিল ডিম পাড়া আছে এমন কাকের বাসার আশপাশে ঘুর ঘুর করে। পুরুষ কোকিল ওই বাসার কাছে গিয়ে স্ত্রী কাককে নানাভাবে উত্তেজিত করতে থাকে। এই সময় কাক পুরুষ কোকিলকে তাড়া করলে, স্ত্রী কোকিল কাকের ডিমগুলো ফেলে দিয়ে, ডিম পাড়ে।

স্ত্রী কোকিল

৬. সবুজ বাঁশপাতি:

সবুজ বাঁশপাতি (ইংরেজি: Green Bee-eater; বৈজ্ঞানিক নাম: Merops Orientalis) বাংলাদেশে লভ্য একটি ছোট আকারের পাখি। দেশের কোনো কোনো স্থানে এটি 'সুইচোরা', 'নরুন চেরা' প্রভৃতি নামেও পরিচিত। মেরোপিদি গোত্রের অন্তর্ভুক্ত এই পাখি নদীতীরবর্তী বন-জঙ্গলে দলবদ্ধভাবে বসবাস করে। । 'ট্রিউ ট্রিউ' তীক্ষ্ম শব্দ করে ডাকে।

সবুজ বাঁশপাতি

৭. কানা বক:

দেশি কানিবক সাদা ডানা ও বাদামি পিঠের মাঝারি আকারের জলচর পাখি। এর দৈর্ঘ্য কমবেশি ৪৬ সেন্টিমিটার, ডানা ২১.৫ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ৬.৩ সেন্টিমিটার, পা ৬.২ সেন্টিমিটার ও লেজ ৭.৮ সেন্টিমিটার। ওজন গড়ে ২১৫ গ্রাম। অন্যসব বকের মতই পুরুষও স্ত্রী পাখি দেখতে অভিন্ন।

কানা বক

৮. দেশি চাঁদি ঠোঁট মুনিয়া:

পাখিটির নাম ‘দেশি চাঁদি ঠোঁট মুনিয়া পাখি’। এর ইংরেজি নাম ‘ইন্ডিয়ান সিলভারবিল (Indian Silverbill)’। বৈজ্ঞানিক নাম ‘লঙ্কুরা মালাবারিকা’ (Lonchura malabarica)। এরা ‘ছোট মুনিয়া’ নামেও পরিচিত।

বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে এক সময় এ পাখি প্রচুর দেখা যেত। চাঁদি ঠোঁট মুনিয়া পাখি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে

দেশি চাঁদি ঠোট মুনিয়া

৯. পানকৌড়ি:

পানকৌড়ি Phalacrocoracidae (ফ্যালাক্রোকোরাসিডি) গোত্রের Phalacrocorax (ফ্যালাক্রোকোরাক্স) গণের অন্তর্ভুক্ত একদল জলচর পাখি। ইংরেজিতে এরা কর্মোরেন্ট ও শ্যাগ নামে পরিচিত। সারা পৃথিবীতে প্রায় ৪০ প্রজাতির পানকৌড়ি রয়েছে এবং এদের সবার দেহে কালো বর্ণের প্রাধান্য রয়েছে।

পানকৌড়ি

১০. পুরুষ কোকিল:

পুরুষ কোকিলের শরীরে চকচকে কালো রঙের মধ্যে নীল ও সবুজের আভা থাকে। আর স্ত্রী পাখির পিঠে বাদামির ওপর সাদা ও পীতাভ চিতি রয়েছে। এদের আকার মাঝারি। দৈর্ঘ্য ৪৩ সেন্টিমিটার, ওজন প্রায় ১৭০ গ্রাম।

পুরুষ কোকিল

১১. উদয়ি ধলা চোখ / বাবুনাই / শ্বেতাক্ষী:

অপরূপ রূপের অধিকারী পাখিটির নাম উদয়ি ধলা চোখ / বাবুনাই / শ্বেতাক্ষী । চোখের চারদিক ঘিরে সাদা বলয় দেখে মনে হয় যেন চশমা পরে আছে। তাই তো চশমা পাখি বা চশমা টুনি নামেও পরিচিত এরা। ইংরেজি নাম হোয়াইট আই (White Eye) বা ওরিয়েন্টাল হোয়াইট আই (Oriental White Eye)।

উদয়ি ধলা চোখ

১২. প্যাঁচা, পেঁচা, বা পেচক:

প্যাঁচা, পেঁচা, বা পেচক এক প্রকার নিশাচর শিকারী পাখি। স্ট্রিজিফর্মিস বর্গভূক্ত এই পাখিটির এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০০টি প্রজাতি টিকে আছে। বেশীরভাগ প্যাঁচা ছোট ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী যেমন ইঁদুর এবং কীটপতঙ্গ শিকার করে, তবে কিছু প্রজাতি মাছও ধরে। প্যাঁচা উপর থেকে ছোঁ মেরে শিকার ধরতে অভ্যস্ত।

পেঁচা

১৩. বেগুনি কালেম:

বেগুনি কালেম (বৈজ্ঞানিক নাম: Porphyrio porphyrio) Rallidae (রেলিডি) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Porphyrio (পরফিরিও) গণের অন্তর্গত এক প্রজাতির কালচে-বেগুনি রঙের জলচর পাখি। বাংলায় এর অনেকগুলো নাম: কালিম, কায়িম, কায়েম, সুন্দরী পাখি (হাওর অঞ্চলে), কাম পাখি ইত্যাদি। নিউজিল্যান্ডে এর নাম পুকেকো। বেগুনি কালেমের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থও বেগুনি কালেম (লাতিন: Porphyrio = বেগুনি কালেম)। পাখিটি বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ওশেনিয়া, আফ্রিকা আর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে দেখা যায়।

বেগুনি কালেম

১৪. বাংলা বুলবুল:

বাংলা বুলবুল (বৈজ্ঞানিক নাম: Pycnonotus cafer) লালপুচ্ছ বুলবুলি বা কালচে বুলবুলি Pycnonotidae (পাইকনোনোটিডি) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Pycnonotus (পাইকনোনোটাস) গণের এক প্রজাতির অতি পরিচিত দুঃসাহসী এক পাখি। বুলবুলি হিসেবে এরা সুপরিচিত।

বুলবুলি

১৫.জোড়া বুলবুলি

বুলবুলির জোড়া

১৬. খয়েরি কাঠঠোকরা:

খয়েরি কাঠঠোকরা বা লালচে কাঠঠোকরা পিসিডি বর্গের অন্তর্গত পাখি। এরা খয়েরি কাঠকুড়ালি নামেও পরিচিত। লালচে কাঠঠোকরার দেহের দৈর্ঘ্য ২৫ সেন্টিমিটার ও ওজন ১০৫ গ্রাম। এদের পুরো দেহের পালক লালচে-খয়েরি, তার ওপর রয়েছে কালচে ডোরা। কাঁধ-ঢাকনি, ডানা লেজ ও বগলে আড়াআড়ি ডোরা রয়েছে। গলার পালক আঁইশের মতো দেখায়। পিঠ ও পেটে হালকা কালচে টান, ছিট ও ছোপ রয়েছে। চোখের রঙ বাদামি লাল। চোখের নিচে অর্ধচন্দ্রাকৃতির উজ্জ্বল লাল পট্টি আছে। ঠোঁট ও নখ কালো। পা ও পায়ের পাতা নীলচে-সবুজ। স্ত্রী আকারে কিছুটা ছোট এবং স্ত্রীর কান-ঢাকনি হালকা পীত বর্ণের। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির বুক ও তলপেটে স্পষ্ট আড়াআড়ি ডোরা ও অর্ধচন্দ্রাকৃতির দাগ থাকে।

খয়েরি কাঠঠোকরা

তথ্যসূত্র: উন্মুক্ত বিশ্বকোষ।

বিভি/এনএ

মন্তব্য করুন: