• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

অষ্টম শ্রেণি পাস হারিছ চৌধুরী পেশায় কৃষক

প্রকাশিত: ১৭:৩০, ৭ মার্চ ২০২২

আপডেট: ২১:৪৬, ৭ মার্চ ২০২২

ফন্ট সাইজ
অষ্টম শ্রেণি পাস হারিছ চৌধুরী পেশায় কৃষক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব প্রয়াত হারিছ চৌধুরী নাম পাল্টিয়ে মাহমুদুর রহমান নামে ভোটার হয়েছিলেন। শুধু নামই, নয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুই বিষয়ে স্নাতোকত্তর পাস হারিছ চৌধুরীর জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) দেখা যায়, তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা দিয়েছিলেন অষ্টম শ্রেণি পাস আর পেশা দিয়েছিলেন কৃষিকাজ। 

মূলত হারিছ চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক প্রশাসন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ ডিগ্রিধারী ছিলেন।

২০১৮ সালে ভোটার হওয়া হারিছ চৌধুরী ওরফে মাহমুদুর রহমান ১৯৫৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জন্ম নেওয়া হারিছ চৌধুরী ভোটার হওয়ার আবেদন করেন ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই। ২০১৮ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ার কারণ হিসেবে তিনি প্রবাসী উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ বিদেশে ছিলেন সেটিই বুঝাতে চেয়েছেন। প্রমাণ স্বরুপ পাসপোর্ট (BA011562) জমা এবং জন্মসনদ (১৯৫৫২৬৯২৫১৪০১৪১৯৮) জমা দিয়েছেন। এনআইডিতে তাঁর বাবার নাম মৃত আব্দুল হাফিজ। মায়ের নাম মৃত রোকেয়া বেগম। স্ত্রীর নাম জোসনা বেগম। বিপত্নীক ও রক্তের গ্রুপ বি পজেটিভ উল্লেখ করেছেন।  

আরও পড়ুন:

 

বর্তমান ঠিকানা হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মণিপুর ৫৬/এ, মিরপুর, ঢাকা এবং স্থায়ী ঠিকানায় লিখেছিলেন সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাদ্রীবাংলা রোড।    

হারিছ চৌধুরীর ভোটার হওয়ার সময় স্বনাক্তকারী হিসেবে শামীমা নাসরীন নামে এক নারীর নাম দেখা যায়। 

মাহমুদুর রহমান নামে হারিছ চৌধুরীর ভোটার হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ূন কবীর বাংলাভিশন ডিজিটালকে বলেন, এই বিষয়ে সরকার বা গোয়েন্দা সংস্থা থেকে যদি তথ্য জানতে চায় যে, তিনি ভোটার হয়েছিলেন কিনা। তাহলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। 

উল্লেখ, ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় হারিছ চৌধুরীর যাবজ্জীবন সাজা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা ও বিস্ফোরক মামলারও আসামি ছিলেন হারিছ চৌধুরী। মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত বিগত ১৪ বছর তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া নিজের রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর ঢাকায় অবস্থানের খবর জানতেন বলে রবিবার (৬ মার্চ) বাংলাভিশন ডিজিটাল-এর সঙ্গে আলাপকালে জানিয়েছেন মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী।

তিনি বলেন, আমার ফাইন্ডিংস বলে বেগম খালেদা জিয়া জানতেন হারিছ চৌধুরী বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তবে কোথায় থাকতেন সেটা জানতেন কি না জানি না।

সিনিয়র এই সাংবাদিক বলেন, হারিছ চৌধুরীর অবস্থান এবং তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে দু’বার লন্ডনে গিয়েছেন তিনি। সেখানে তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। দীর্ঘদিন তিনি লেগেছিলেন এটার পেছনে। তাঁর ইচ্ছা ছিলো ইন্টারভিউ করার। তা আর হয়নি। হঠাৎ করে একটি সোর্স তাঁকে জানান, হারিছ চৌধুরী করোনায় আক্রান্ত। রাজধানীর এভার কেয়ারে ভর্তি। হাসপাতালে গিয়ে হারিছ চৌধুরী নামে কাউকে পাওয়া যায়নি। খুঁজতে খুঁজতে জানতে পারি তাঁর পরিবর্তন করা নাম মাহমুদুর রহমান। ওই নামেই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি।

তিনি বলেন, পান্থপথের যে বাসায় হারিছ চৌধুরী থাকতেন সেখানে একটি কিশোর ছেলে এবং কাজের বুয়া ছাড়া আর কেউ থাকতেন না। তারাই দেখাশুনা করতেন।

গণমাধ্যমের খবর, গত বছর ২৬ আগস্ট করোনায় আক্রান্ত হয়ে মাহমুদুর রহমান নামে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন হারিছ চৌধুরী। এর আগে অন্য একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মারা যান গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর। ডেথ সার্টিফিকেটে বলা হয়েছে তিনি Covid with Septic Shock এ মারা গেছেন। প্রফেসর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মাহবুব নূরের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। ৪ সেপ্টেম্বর ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করেন সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আ ক ম নূর। মাহমুদুর নামেই তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়। 

বিভি/এইচকে

মন্তব্য করুন: