• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

হার্মার ভেল্কিতে হতাশায় দিন গেলো টাইগারদের

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:৪৪, ১ এপ্রিল ২০২২

আপডেট: ২২:৫০, ১ এপ্রিল ২০২২

ফন্ট সাইজ
হার্মার ভেল্কিতে হতাশায় দিন গেলো টাইগারদের

জাতীয় দলের হয়ে দীর্ঘ ছয় বছরপর খেলতে নেমেছে সাইমন হার্মার। কিন্তু প্রত্যাবর্তনকে রাঙিয়ে তুলেছেন ডারবানের ২২ গজে। ২০১৫ সালে জাতীয় দলের জার্সিতে শেষ খেলেছিলেন ৩২ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। ডারবানে যখন ফিরলেন মাঝে দক্ষিণ আফ্রিকা খেলে ফেলেছে ৫৫ টেস্ট। অথচ একাদশে সুযোগ পেয়ে দুর্বার হার্মার। ফিরে এসে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের নাকানিচুনানি খাওয়ালেন। সাদমান, শান্ত, মুমিনুল, মুশফিকরা স্রেফ যেন অসহায় তার স্পিন ঘূর্ণিতে। 

শুক্রবার ৪ উইকেটে ৯৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩৬৭ রানে আটকে দেয়া বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে ২৬৯ রানে।

২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেকের পর বাংলাদেশ সফর করেন এই অফস্পিনার। সেখান থেকে ভারত। নাগপুরে টেস্ট খেলার পর ফুলস্টপ পড়ে যায় আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে। অফফর্মের কারণে বাদ পড়েন। এরপর কলপ্যাক চুক্তিতে চলে যান এসেক্সে। ২০২৬ পর্যন্ত কাউন্টির ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি থাকলেও ২০২০ সালে যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে এলে ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়ে হার্মারের। হার্মার ফেরেন নিজ দেশে। নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে পারফর্ম করে আবার আলো কেড়ে নেন।

বাংলাদেশের বিপক্ষে ডারবানে মাঠে নামার আগে ১২ ইনিংসে ৪৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। তাতে জাতীয় দলের দরজা খুলে যায়। বল হাতে শুরু থেকে নিখুঁত লাইন ও লেন্থ ধরে রেখেছেন। উচ্চতা খানিকটা বেশি হওয়ায় উইকেট থেকে বাড়তি বাউন্স পাচ্ছিলেন। যা ছিল বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য বিপজ্জনক।  

এদিকে ডারবানের উইকেট অনিশ্চয়তায় ভরা। কখনো বল উঠছে। কখনো নামছে। জয় একপাশে ঠাণ্ডা মেজাজে ভালো খেললেও তাকে কেউ সমর্থন করতে পারছিলেন না। সাদমান ইসলাম রানে ফিরতে পারেননি এবারও। হার্মারের আর্ম বল ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন ৯ রানে। 

চা-বিরতির পর শান্ত ও জয় প্রোটিয়াদের আক্রমণ ভালোভাবে সামলে নেন। উইকেটের চারপাশে দুজন দারুণ কয়েকটি শট খেলেন। মনে হচ্ছিল দুই তরুণে ভর করে দ্বিতীয় দিন ভালোভাবে শেষ করবে বাংলাদেশ। কিন্তু হার্মার তা হতে দিলেন কই!

শান্তকে অসাধারণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন। অফ লেগ স্টাম্পের কাছে পড়ে শার্প টার্ন করে বল অফস্টাম্পে আঘাত করে। যে কোনো অফস্পিনারের জন্য এই বল স্বপ্নের মতো। ২টি করে চার ও ছক্কায় ৩৮ রানে শান্ত ফেরার পর ক্রিজে আসেন মুমিনুল। নিজের ৫০তম টেস্ট মুমিনুল রাঙাতে পারলেন না। ইনসাইড এজ হয়ে মিড অফে ক্যাচ দেন শূন্য রানে। ১১তম ডাককে সঙ্গী করে ড্রেসিংরুমের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয় অধিনায়ককে।

হতাশা বাড়ান মুশফিকুর রহিমও। লেগ স্টাম্পের ওপরের বল খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ৭ রানে। অথচ তরুণ জয় ছিলেন প্রাণবন্ত। বলের মেরিট অনুযায়ী খেলেছেন। আলগা কোনো শট না খেলে টাইমিং মিলিয়েছেন। তাতে আত্মবিশ্বাস পেয়েছেন প্রবল। ৪ বাউন্ডারিতে ৪৪ রানের ইনিংস সাজিয়ে অপরাজিত আছেন। তাকে শেষ দিকে সঙ্গ দিয়েছেন তাসকিন। 

এর আগে সকালের সেশনে ৪ উইকেট নিয়ে খেলা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনে দক্ষিণ আফ্রিকার লেজের ব্যাটসম্যানদের প্রতিরোধে বড় পুঁজি পায় স্বাগতিকরা। 

বল হাতে দ্যুতি ছড়ানোর আগে হার্মার ব্যাট হাতেও রান করেন। ৭৩ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন। প্রোটিয়রা শেষ দুই জুটিতে পায় মহামূল্য ৬৯ রান। অথচ তেম্বা বাভুমাকে বাংলাদেশ সেঞ্চুরির আগেই ফিরিয়েছে। মিরাজের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বাভুমা বোল্ড হন ৯৩ রানে। উইয়ান মুল্ডারকে রানের খাতা খুলতে দেননি খালেদ। সব মিলিয়ে ডানহাতি পেসার ৯২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ছিলেন বাংলাদেশের সেরা বোলার।

দেশের মাটিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩৬৭ রান দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বনিম্ন। এর আগে ৪২৯ ও ৪৪১ রানে তারা অলআউট হয়েছিল। বোলাররা লড়াইয়ে এগিয়ে রাখলেও মুশফিক, মুমিনুলদের ব্যর্থতার দিনে বাংলাদেশ সঙ্গী করেছে একরাশ হতাশা।

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2