নতুন নাটকীয়তা নাকি পুরোনো হতাশা, কী খবর আসবে অ্যান্টিগা থেকে?

খালেদ আহমেদ যে ভেলকি দেখিয়েছিলেন তৃতীয় দিনের শেষবেলায়, ওইরকম কোনো স্পেল কী আসবে আজ? নাকি ৫-৬ ওভারের বেধড়ক পিটুনিতে ব্যাট উঁচিয়ে ফিরবেন ক্যারিবীয়রা? নাটকীয়তা বা হতাশা এর বাইরে আর কিছুই আসার নেই অ্যান্টিগা টেস্ট থেকে।

কেননা অ্যান্টিগা টেস্টের চতুর্থ দিন শুরুর আগে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে ৭ উইকেট দূরে। আর স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ পিছিয়ে আছে মাত্র ৩৫ রানে। এই ম্যাচ থেকে জয় আশা করা একেবারেই বোকামী। যদি টাইগারদের অনুকূলে কিছু ঘটে তবে সেটাকে নাটকীয়তাই বলতে হবে।

প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৮৪ রানের বেশি লক্ষ্য দিতে পারেনি বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনে ক্যারিবীয়রা খালেদ আহমেদের বোলিংয়ে কিছুটা ধাক্কা খেলেও দিন শেষে ৩ উইকেটে ৪৯ রান নিয়ে খেলা শেষ করে। দিনের শেষদিকে জার্মেইন ব্ল্যাকউড ও জন ক্যাম্পবেলের জুটি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জয়ের পথে নিয়ে গেছে অনেকখানি। জয় পেতে চতুর্থ দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ৩৫ রান।

দ্বিতীয় ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সাফল্য পায় বাংলাদেশ। খালেদ তার প্রথম ওভারেই ক্যারিবীয় অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন। ফলে ১ রান করেই ফিরতে হয় তাকে। এরপর নিজের পঞ্চম বলে রেমন্ড রেইফারকে ফেরান খালেদ। দ্বিতীয় ওভারে বোনারকে বোল্ড করেন এই টাইগার পেসার। বাকি সময়টা সাবলীল হাতে সামলেছেন ব্ল্যাকউড ও ক্যাম্পবেল। ব্ল্যাকউড ১৭ ও ক্যাম্পবেল ২৮ রান করে অপরাজিত থেকে দিনের খেলা শেষ করেছেন।

এর আগে অ্যান্টিগায় বাংলাদেশ ২ উইকেটে ৫০ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিল। অবশ্য সকালের শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশ দলের। দিনের খেলা শুরুর আধা ঘণ্টা পরই ধৈর্য্য হারিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা এই ব্যাটার কাইল মেয়ার্সের  বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন ১৭ রান করে। এরপর মুমিনুল হক বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তিনি মেয়ার্সের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে। যদিও রিভিউ নিয়েছিলেন তিনি। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বল মিডল স্টাম্পে হিট করে লেগ স্টাম্পে ছুঁয়ে গেছে। ফলে মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। প্রথম ইনিংসে এই ব্যাটার আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে।

ইনিংসের ৪০তম ওভারে তৃতীয় বলে মাহমুদুল হাসান জয়ের সিঙ্গেলে বাংলাদেশের সংগ্রহ শতরান ছাড়ায়। এর পরের বলেই কেমার রোচকে কাট করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন ১৭ রান করা লিটন দাস। দিনের শুরু থেকেই দারুণ ধৈর্য্যশীল ব্যাটিং করেছেন জয়। যদিও ব্যক্তিগত ৪২ রানে তিনি রোচের বলে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন। এরপর নুরুল হাসান সোহানকে নিয়ে লাঞ্চের আগ পর্যন্ত সামাল দেন সাকিব আল হাসান। দ্বিতীয় সেশনে এই দুজনে বাংলাদেশের ইনিংস টেনেছেন। 

বিরতির পর বেশ কয়েকবার জীবন পেয়েছেন বাংলাদেশের দুই ব্যাটার সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহান। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন দুজনই। তাদের ব্যাটে ভর করে দ্বিতীয় ইনিংস লিড নিশ্চিত করে টাইগাররা। সাকিব ৮১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। হাফ সেঞ্চুরি থেকে মাত্র এক রান দূরে থেকে চা পানের বিরতিতে যান সোহান। দ্বিতীয় সেশনে ২৭ ওভার খেলে কোনো উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশ যোগ করে ৯৫ রান। বিরতি শেষে ১১০ বলে নিজের হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সোহান। 

দারুণ খেলতে থাকা সাকিব ব্যক্তিগত ৬৩ রানে রোচের বলে  ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন। ফলে সোহানের সঙ্গে তার ১২৩ রানের জুটি ভাঙে। এরপর মুস্তাফিজুর রহমান দারুণ এক ছক্কা মেরেছেন রোচকে। যদিও  বেশিদূর এগোতে দেননি জোসেফ। মুস্তাফিজকে ৭ রানে বোল্ড করে ফিরিয়েছেন। এরপর ১ রান করা এবাদত হোসেনকে বোল্ড করে বাংলাদেশের ইনিংস ২৪৫ রানে গুটিয়ে দিয়েছেন রোচ। 

প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানে অলআউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ করেছে ২৪৫। দ্বিতীয় ইনিংসেও টপঅর্ডারদের ব্যর্থতায় অল্প রানেই গুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। তবে সাকিব-সোহানের ১২৩ রানের জুটিতে ইনিংস হার এড়ায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংস শেষে বাংলাদেশের লিড দাঁড়ায় ৮৩ রানের।