শান্তির বার্তা দিতে নাগাসাকিতে ইসরাইলিরা, বাজানো ঘণ্টার তহবিল জোগালেন বোমা সংশ্লিষ্টের স্বজন

ছবি: সংগৃহীত
জাপানের নাগাসাকিতে ৮০ বছর আগে ঘটে যাওয়া পারমাণবিক হামলার স্মৃতিতে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ১৯৪৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক আঘাতে বিধ্বস্ত হওয়া নাগাসাকির ইম্যাকুলেট কনসেপশন ক্যাথেড্রালের ঘণ্টাটি দীর্ঘ ৮০ বছর পর প্রথমবারের মতো পুনরায় বাজানো হয়।
৯ আগস্ট সকালে শতশত মানুষ নাগাসাকির ঐতিহাসিক গির্জায় একত্রিত হন। স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ২ মিনিটে অর্থাৎ ৮০ বছর আগে যে সময় পারমাণবিক বোমাটি ফেলা হয়েছিল, ঠিক সেই সময় দুটি ঘণ্টা একসঙ্গে বাজানো হয়। এই বাজনা ওই ভয়ঙ্কর মুহূর্তের স্মৃতিকে জাগিয়ে তোলে।
হিরোশিমায় পারমাণবিক বোমা হামলার ৩ দিন পর ১৯৪৫ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্র জাপানের নাগাসাকিতে আরেকটি পারমাণবিক বোমা ফেলে। নাগাসাকিতে এই হামলায় প্রায় ৭৪,০০০ মানুষ প্রাণ হারান। আর হিরোশিমায় নিহতের সংখ্যা ছিল প্রায় ১,৪০,০০০। পরবর্তীতে ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট জাপান আত্মসমর্পণ করে। এভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটে।
নাগাসাকির উরাকামি ক্যাথেড্রাল নামে পরিচিত চার্চটি ১৯৫৯ সালে পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল। এটি ভয়ংকর পারমাণবিক বিস্ফোরণের কারণে প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। ধ্বংসস্তূপ থেকে চার্চের দুইটি ঘণ্টার একটি ঘণ্টা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল।
এই বছর নাগাসাকির স্মরণ অনুষ্ঠানে প্রায় ১০০টি দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘ সময়ের বিরতির পর এবার প্রথমবার রাশিয়াও এতে অংশগ্রহণ করেছে। তবে সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো এবার শান্তির বার্তা দিতে ইসরাইলের প্রতিনিধিরাও সেখানে অংশগ্রহণ করেন। যদিও গত বছর গাজায় যুদ্ধের কারণে তারা সেখানে আমন্ত্রণ পাননি।
এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইলিয়ামস কলেজের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক জেমস নোলান নতুন ঘণ্টাটি তৈরির জন্য তহবিল সংগ্রহের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার দাদা ছিলেন ম্যানহাটন প্রোজেক্টের একজন সদস্য। তিনি মার্কিনীদের প্রথম পারমাণবিক বোমা তৈরি করার কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নোলান বিভিন্ন চার্চে বক্তৃতা দিয়ে প্রায় এক বছরে ১,২৫,০০০ ডলার তহবিল সংগ্রহ করেন। এই নতুন ঘণ্টাটি ২০২৫ সালের শুরুতে নাগাসাকিতে স্থাপন করা হয়।
গির্জার প্রধান পুরোহিত কেনিচি ইয়ামামুরা বলেছেন, এই ঘণ্টার পুনরুদ্ধার মানবতার মহান মূল্যবোধের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত। তিনি আরও বলেন, এটি অতীতের আঘাত ভুলে যাওয়া নয়, বরং সেই আঘাতগুলোকে স্বীকার করে সবাই মিলে শান্তির পথে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: