শৃঙ্খলিত সংবাদপত্র মানে শৃঙ্খলিত সমাজ: কাদের গনি চৌধুরী

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, শৃঙ্খলিত সংবাদপত্র মানে শৃঙ্খলিত সমাজ। মানবিক বাংলাদেশ এর অভীষ্ট অর্জনে মুক্ত গণমাধ্যম অন্যতম পূর্বশর্ত। তাই, সাংবাদিকতাকে বাধাহীন করতে হবে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব বলেন। যশোর প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি আকরামুজ্জামানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ ও তৌহিদ জামানের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপিকা নার্গিস বেগম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, সহকারি মহাসচিব এহতেশামুল হক শাওন, যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি এড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যশোর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল,শান্তনু ইসলাম সুমিত, যশোর প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদুর রহমান,নুরুল ইসলাম, এম আইউব, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আনিসুজ্জামান, আবদুর রাজ্জাক রানা বক্তব্য রাখেন।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, একজন সাংবাদিকের কাজ সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা। সে জন্য গণমাধ্যমকে সমাজের দর্পণ বলা হয়। এই দর্পণে প্রতিবিম্বিত হয় সমাজের প্রতিচিত্র। অন্যায়, অনিয়ম, নিগ্রহ, শোষণ-বঞ্চনা ও অধিকার হরণের বিরুদ্ধে একজন সাংবাদিককে সোচ্চার থাকতে হয় সবসময়। চোখ রাঙানোকে গণ্য না করে নির্ভীক ও নিরলসভাবে কাজ করতে হয়। প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার চিত্র প্রত্যক্ষ করতে হয়। মানুষের সমস্যার কথা তুলে ধরার দায়িত্ব পালন করতে হয়। অনেক বাধা বিপত্তির মধ্যে তাদের দিন যায়। ক্ষমতাধরদের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হয়। অভাব অনটনের ভেতর শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়াতে হয়। একজন সাংবাদিকের কাজ সত্যকে খুঁজে বের করা এবং সেই সত্যকে রক্ষা করা। তাই সাংবাদিককে যেমন সাহসী হতে হয়- তেমনি সত্যনিষ্ঠ ও নীতির প্রশ্নে আপসহীন এবং ন্যায়ের প্রশ্নে অবিচল থাকতে হয়।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমের নৈতিকতার মূল উদ্দেশ্য হলো সত্য তথ্যের সঠিক পরিবেশনা। একজন সাংবাদিক সবার আগে সত্যের কাছে ও পরে তার পাঠকের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন; এর বাইরে কারো কাছেই সাংবাদিকরা দায়বদ্ধ নন। সততা, নির্ভুলতা ও পক্ষপাতহীনতা-সার্বিকভাবে এই তিন হলো সাংবাদিকতার নীতিমালার মূল ভিত্তি; কোনো অবস্থাতেই এর কোনো একটিরও ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না।
নার্গিস বেগম বলেন, বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করলে পালাতে হয় না। যারা পালিয়েছে তারা সাংবাদিকতার নীতি-আদর্শ বিসর্জন দিয়ে দলদাসে পরিণত হয়েছিলেন। আমরা এমন একটি পরিবর্তিত গণমাধ্যম দেখতে চাই, যেখানে একজন সাংবাদিক কোনো পক্ষের চাপ ছাড়াই ঘটনার গভীরে গিয়ে সত্য তুলে ধরতে পারবেন। যেখানে অনুসন্ধানই হবে সত্যের সমাহার, আর দায়িত্ববোধই হবে সাংবাদিকতার মূল শক্তি।
ওবায়দুর রহমান শাহীন বলেন, সরকার সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা নীতিমালার উদ্যোগ নিয়েছেন। এই নীতিমালায় আইনি সুরক্ষার বিষয়টি আসলেও চাকরি ক্ষেত্রে সুরক্ষার বিষয়টি এখানে সেভাবে আসেনি। অধিকাংশ পত্রিকা সাংবাদিকদের নিয়মিত বেতন দেয় না, পাওনা না দেওয়া এবং যখন তখন চাকুরিচ্যুতির সুবিধার্থে সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীদের নিয়োগপত্র দেন না। ৬ মাস পর চাকরি স্থায়ী করার নিয়ম থাকলেও তা মানেন না। ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী বেতন দেয় না ৯০ ভাগ গণমাধ্যম। চাকরি চলে গেলে বা চাকরি ছেড়ে দিলে দেনা পাওনা পরিশোধ করে না। এ বিষয়ে সুরক্ষার ব্যবস্থা করা খুবই জরুরি। অধিকাংশ গণমাধ্যম ঢাকার বাইরের সাংবাদিকদের বেতন দেন না। কিছু কিছু পত্রিকা ২ থেকে ৫ হাজার বেতন দেন।
বিভি/পিএইচ
মন্তব্য করুন: