• NEWS PORTAL

  • মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

৭ বউয়ের কথিত স্বামী ও মানবপাচার চক্রের দেশি এজেন্ট গ্রেফতার

হাসান আলী, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:২৪, ২১ জুলাই ২০২৫

ফন্ট সাইজ
৭ বউয়ের কথিত স্বামী ও মানবপাচার চক্রের দেশি এজেন্ট গ্রেফতার

কথিত ৭ বউয়ের স্বামী ও মানবপাচার চক্রের দেশি এজেন্ট রবিজুল (বৃত্তে চিহ্নিত)

অবশেষে কুষ্টিয়ার আলোচিত ও কথিত ৭ স্ত্রী’র স্বামী মানব পাচার ও মুক্তিপণ আদায় চক্রের দেশীয় এজেন্ট বা হোতা রবিজুল(৪৫)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার বিকেলে খোকসা উপজেলার সন্তোষপুর গ্রাম থেকে ইবি থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

সোমবার বিকেলে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক মৌসুমী খানের আদালতে সৌপর্দ করা হয়। আদালত শুনানী শেষে রবিজুলকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন।

এর আগে গত ৭ জুলাই কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ফকিরাবাদ গ্রামের নওদাপাড়ার বাসিন্দা শরিফুল ইসলামের স্ত্রী মোছা: শ্যামলী খাতুন মানব পাচার ও জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ এনে রবিজুলসহ ৯জনের নামোল্লেখ করে ইবি থানায় মামলা করেন। রবিজুলকে এ মামলার এজাহার নামীয় ০১ নং আসামি হিসেবে গ্রেফতার করা হয়।

এ মামলার এজাহার নামীয় অপর আসামীরা হলেন- ব্রাক্ষণবাড়িয়া নাসিরনগর থানার মাইজখোলা গ্রামের নুরু মিয়ার ছেলে মানিক মিয়া (৪০), নরু মিয়ার স্ত্রী জোহেরা খাতুন (৬০), কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ফকিরাবাদ গ্রামের বাসিন্দা আহম্মদ বিশ্বাসের ছেলে মহিবুল ইসলাম (৪৫) মহিবুল ইসলামের স্ত্রী মোছা. স্বর্ণা খাতুন (৪০) ও ছেলে আশরাফুল ইসলাম (২৪), দেলোয়ার হোসেনের ছেলে রুহুল আমীন (৩০), রুহুল আমীনের স্ত্রী মহিমা খাতুন (২৫) এবং ০১নং আসামী রবিজুলের স্ত্রী ছকিনা ওরফে মিতা খাতুন (২৮)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ইবি থানার অফিসার ইনচার্জ মেহেদী হাসান বলেন, ‘রবিজুল দীর্ঘদিন ধরে মনব পাচারসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের জন মানবশুন্য মরু অঞ্চলের বন্দিশালায় দিনের পর দিন মাসের পর মাস ধরে মানুষকে আটকে রেখে দেশে থাকা পরিবার পরিজনের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে আসছিলো বলে অভিযোগ রয়েছে। কুষ্টিয়াসহ আশপাশের আরও কয়েকটি জেলার বিভিন্ন থানায় একই অভিযোগে অন্তত ডজনাধিক মামলা রয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ‘কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ফকিারাবাদ গ্রামের বাসিন্দা আরমান আলী’র ছেলে লিবিয়া প্রবাসী হাসপাতাল কর্মী শরিফুল ইসলাম (৩২) এবং তার চাচাতো ভাই আক্তারুল ইসলাম (৩৫)কে আরও ভালো কাজ ও বেশি বেতনের চাকরী দেয়ার

প্রলোভন দেখিয়ে সেখান থেকে ভাগিয়ে নিয়ে লিবিয়ার জনমানব শুন্য মরু অঞ্চলের মাফিয়া চক্রের হাতে তুলে দেয়। ওই মাফিয়াচক্র শরিফুল ও আক্তারুলকে একটি বন্দিশালায় হাত-পা বধে আটকে রেখে মারধর করে এবং সেই ভিডিও চিত্র ইমো’র মাধ্যমে বন্দি শরিফুল ইসলামের স্ত্রী মামলার বাদী মোছা: শ্যামলী খাতুনকে দেখিয়ে তার স্বামীর মুক্তিপণ বাবদ ১৭ লক্ষ টাকা দাবি করেন। অন্যথায় শরিফুল ইসলামকে হত্যা করে লাশ গুম করে দেয়ার ভয়ভীতি দেখায়।

এমন ভীতিকর পরিস্থিতিতে উপায়ান্তর না পেয়ে মামলার বাদি ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ থেকে ১৯ মে ২০২৫ সময়কালের মধ্যে ৬ দফায় একে একে বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব ও বিকাশের মাধ্যমে সর্বমোট ২১ লক্ষ ৪১ হাজার টাকা পরিশোধ করার পরও ওই মাফিয়া চক্র শরিফুল ইসলাম ও তার চাচাতো ভাই আক্তারুল ইসলামকে কথামতো ফিরিয়ে না দিয়ে তাদের দু’জনকে নিরুদ্দেশ করে দেয় মাফিয়া চক্র। অদ্যবধি লিবিয়া প্রবাসী দুই চাচাতো ভাই’য়ের সাথে পরিবারের আর কোন যোগাযোগ নেই এবং মাফিয়া চক্রের ওইসব ফোন নম্বরগুলিও বন্ধ করে দিয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে নিঁখোজ শরিফুল ইসলাম ও আক্তারুল ইসলামকে দেশে ফেরত চেয়ে মানব পাচার ও মুক্তিপণ আদায়ে জড়িত লিবিয়ার অজ্ঞাত মাফিয়া চক্রের সদস্য এবং দেশীয় সমন্বয়কারী দালালচক্রের ৯ সদস্যের নামোল্লেখসহ মানব পাচার ও জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ এনে গত ০৯ জুলাই ২০২৫ তারিখে কুষ্টিয়ার ইবি থানায় মামলা করেন শ্যামলী খাতুন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ইবি থানার অফিসার ইসচার্জ মেহেদী হাসান জানান, ‘আলোচিত ৭ বউয়ের কথিত স্বামী রবিজুল দীর্ঘদিন ধরে একটি সংঘবদ্ধ মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য। কার্যত: রবিজুলের বাড়িতে সাথে অবস্থান করা নারীরা তার বউ নন; তারাও রবিজুলের মানব (নারী ও পুরুষ) পাচারে সরাসরি জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে রবিজুলের বিরুদ্ধে মান পাচার ও প্রতারণার অভিযোগে প্রায় ডজন খানেক মামলার তথ্য আমাদের কাছে এসেছে। 

এছাড়া গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের এসব অপরাধে জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেছে’। সোমবার দুপুরে তাকে আদালতে সৌপর্দ করলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন বলেও জানান ওসি।

উল্লেখ্য ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে একসাথে ৭ বউয়ের স্বামী রবিজুলের সংবাদ প্রকাশ হলে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তাছাড়া ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত সংবাদটি ব্যাপক ভাইরাল হয়। ওই ঘটনার মধ্যদিয়েই মানব পাচারকারী রবিজুলের গোমর ফাঁসের সূত্রপাত হয় গণমাধ্যমে।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2