• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

শেষবিদায়ে মেয়ের কফিনে বাবার চুমু, বাকরুদ্ধ মা!  

প্রকাশিত: ২০:৪২, ২২ জুলাই ২০২৫

ফন্ট সাইজ
শেষবিদায়ে মেয়ের কফিনে বাবার চুমু, বাকরুদ্ধ মা!  

মেয়ে মেহেনাজ আফরি হুমায়রার (৯) মৃত্যু স্তব্ধ করে দিয়েছে মা সুমি আক্তারকে। শোকে বাকরুদ্ধ তিনি। মাঝেমধ্যে চোখ খুলে চারিদিকে অবাক তাকিয়ে থাকছেন, আবার মুহূর্তেই মূর্ছা যাচ্ছেন। বাড়ির উঠানে আর্তনাদ করছেন বৃদ্ধা দাদি। এদিকে মেয়ের কফিনে বারবার চুমু খেয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে শেষ বিদায় জানাচ্ছিলেন বাবা দেলোয়ার হোসাইন রানা।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার হতেয়া কেরানীপাড়া হুমায়রার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে এমন করুণ দৃশ্য। 

গতকাল সোমবার রাজধানীর উত্তরায় দিয়াবাড়িতে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মাইলস্টোন স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মেহেনাজ আফরি হুমায়রার মৃত্যু হয়। হুমায়রা ওই এলাকার দেলোয়ার হোসাইনের একমাত্র মেয়ে। দেলোয়ার হোসাইন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক। তবে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দেলোয়ার হোসাইন ও তার স্ত্রী সুমি আক্তার প্রাণে বেঁচে গেছেন।

শিশু হুমায়রার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বিমান দুর্ঘটনায় হুমায়রার মৃত্যুর খবরটি সোমবার বিকালেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজন সন্ধ্যার পর থেকেই গ্রামের বাড়িতে ভিড় করতে থাকেন। রাত আড়াইটার দিকে হুমায়রার লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এ সময় ওই বাড়িতে কান্না ও আহাজারির শব্দে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। সকলের প্রিয় ছোট্ট হুমায়রার মৃত্যু যেন এলাকাবাসীও মেনে নিতে পারছে না। হুমায়রার বাবা দেলোয়ার ও মা সুমি আক্তারের চোখের পানি যেন ফুরিয়ে গেছে। পরিচিতজন বন্ধুবান্ধবদের কোনো সান্ত্বনার বাণী যেনো তাদের নিভৃত করতে পারছে না।

হুমায়রার বৃদ্ধা দাদি আহাজারি করছেন, ‘আমার বোন (নাতনি হুমায়রা) ঈদের মধ্যে বাড়িতে আইছিলো। বাড়িজুইড়্যা কতো দৌড়াদৌড়ি খেলাধুলা করলো! ওইটাই ছিল আমার সঙ্গে শেষ দেহা। এরপরে গত সপ্তাহে মাত্র একবার ফোনে কথা কইছিলাম। গতকাল (সোমবার) সকালেও ফোনে কথা কইতে চাইছিলো, কিন্তু কবার পারি নাই। শেষ কথা না কইয়াই বোনে আমার চইল্যা গেল!’

হুমায়রার বাবা দেলোয়ার হোসাইন বলেন, ‘হুমায়রার ছুটি হয়েছিল। তাকে বলেছি, অপেক্ষা করো তোমার মা নিতে আসবে। সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হচ্ছে-আমার স্ত্রী (সুমি) শ্রেণিকক্ষের কাছে যাওয়ার আগেই ওর সামনে দিয়ে বিমানটি আমার মেয়ের শ্রেণিকক্ষের ভেতর ঢুকে পড়েছে। সব ঘটনা আমার স্ত্রীর চোখের সামনেই ঘটেছে, তাকে কীভাবে সান্ত্বনা দেব।’ তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানান, শহরের ভেতরে যেনো আর কখনো বিমানের প্রশিক্ষণ না হয়।

এদিকে হুমায়রার দাদা আব্দুল বাছেদের আর্তনাদে উপস্থিত কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। তিনি শুধু বলছেন, ‘এবার কুরবানির ঈদে দাদু এসেছিল। দাদু সারাক্ষণ আমার সঙ্গেই থাকতো। দাদু আর কোনোদিন আসবে না! আর আমাকে দাদু বলবে না!’

মঙ্গলবার সকাল ৯টায় হতেয়া গাবলের বাজারে হুমায়রার জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2